করোনা ভাইরাস, চিন্তিত কারা কর্তৃপক্ষ: প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০ জন বন্দির জায়গায় ১২০ জন

0

 ঢাকা অফিস: রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দির ধারণ ক্ষমতা এক হাজার ৪৫০ জন। কিন্তু গত বুধবার পর্যন্ত হাজতি এবং কয়েদি মিলে বন্দি ছিলেন তিন হাজার ৪০০ জন। অর্থাৎ দিগুনের বেশি বন্দি রয়েছে এই কারাগারে। ফলে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বন্দিদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, মার্চের শুরুর দিকে বন্দি সংখ্যা কিছুটা কম ছিলো। এখন আদালতে জামিন শুনানি বন্ধ রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিনই আসামি গ্রেপ্তার হচ্ছে। তাদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এতে কারাগারে বাড়ছে বন্দির সংখ্যা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে যে ওয়ার্ডে ৫০ জন বন্দি থাকার কথা সেখানে গাদাগাদি করে থাকেন অন্তত ১২০ জন। গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে তাদের ঘুমাতে হয় রাতে। যেখানে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলছে সেখানে কারাগারে এটি নিশ্চিত করার কোনো ব্যবস্থায় নেই। বিষয়টি ভাবাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষকে। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন বলেন, কারাগারে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার কোনো উপায় নেই। এটি একটি বড় সমস্যা।কোনোভাবে একজন আক্রান্ত ব্যক্তি কারাগারে চলে এলে কী হবে সেটা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছে। করোনা নিয়ে আমরা সতর্ক আছি। বন্দিদের সব সময় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখছি। সময় মতো গোসল, হাত ধোয়া; এগুলো আমরা নিশ্চিত করছি। পাশাপাশি নতুন বন্দি এলে কারা ফটকেই চিকিৎসক দিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। মহানগর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আবুল হাশেম জানান, আদালতে বিচারক আছেন। ছোট-খাটো যেসব মামলার জামিন গ্রেপ্তারের পরই দেওয়া সম্ভব তাদের জামিন দিচ্ছেন। কিন্তু বড় মামলার আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এদের আবার জামিনের আবেদন করতে পারছেন না আইনজীবীরা। পুরনো যেসব বন্দি কারাগারে আছেন তাদেরও জামিন শুনানি হচ্ছে না। ফলে কারাগারে বন্দি আসামির সংখ্যা বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন বলেন, আদালতে জামিন শুনানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে ৪০০ বন্দির জামিন হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন কোনো না কোনো কয়েদির সাজার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে। এর বিপরীতে এখন আসামি আসছেন কম। গিয়াস উদ্দিন আরো জানান, কারাগারে প্রতিদিন নতুন যেসব বন্দি আসছেন তাদের ১৪ দিন আলাদা করে রাখা হচ্ছে। আর কারাফটকেই চিকিৎসক তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। অসুস্থ কেউ থাকলে তাকেও পুরোপুরি আলাদাভাবে রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, কারাগারে আগে যে রকম বন্দি থাকতেন এখনও সংখ্যাটা মোটামুটি সে রকমই আছে। তবে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি বন্দি আছেন, এটা ঠিক। করোনা ভাইরাস নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা একটা ভয়ের ব্যাপার।

Share.