ঢাকা অফিস: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এক ইসলামী দলের নেতার জানাজায় বিপুল সংখ্যায় মানুষের উপস্থিতি ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন টিটুকে ওই এলাকার দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। শনিবার সকালে ওই জানাজায় বিপুল মানুষের গা ঘেঁষাঘেষি করে অংশগ্রহণ দেখে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জানাজায় লোক সমাগমের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে না পারায় ওসি সরাইলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওসি মো. শাহাদাৎ জনসমাগমের পর বলেছিলেন, “আমরা চিন্তাও করতে পারিনি যে এত লোক হবে। লোকজন আসতে শুরু করার পর আমাদের আর কিছু করার ছিল না।” সরাইলের ইউএনও আবু সালেহ মো. মুসা বলেছিলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে এই জানাজার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুলিশকে জানালেও তারা কিছু করতে পারেনি। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর এর বিস্তার ঠেকাতে দেশজুড়ে যে অবরুদ্ধ অবস্থা তৈরি করা হয়েছে, তাতে যে কোনো জনসমাগম এখন নিষিদ্ধ। মসজিদগুলোতে নামাজ পড়তে মুসল্লিদের ঢোকা বন্ধ করা হয়েছে, কবরস্থানে যাওয়ায়ও বারণ করা হয়েছে। যেহেতু এই করোনা ভাইরাসের কোনো টিকা কিংবা নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই, তাই সংক্রমণ এড়াতে মানুষের বিচরণ কমানোই একমাত্র পন্থা। এজন্য ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে সবাইকে। বাংলাদেশে মানুষকে তা মানাতে গিয়ে পুলিশের হিমশিম খাওয়ার মধ্যে শুক্রবারই তাদের আরও কঠোর হতে বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তার পরদিনই সরাইলে পুলিশের সামনে হাজার হাজার মানুষকে জড়ো করে খেলাফত মজলিশ নেতা মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজা হল। আনসারীর প্রতিষ্ঠিত সরাইলের জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসায় শনিবার সকাল ১০টা থেকে এই জানাজা হয়। এতে মানুষের ভিড় মাদ্রাসার সীমানা ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গিয়ে ঠেকেছিল। আনসারী শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মার্কাস পাড়ায় নিজের বাসায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তিনি ১৯৯৬ সালে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে হেরেছিলেন।
আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষ: ওসি প্রত্যাহার
0
Share.