ঢাকা অফিস: মাস্ক না পরায় এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে কলকাতা। পশ্চিমবঙ্গে বাড়ির বাইরে বেরোলেই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই নির্দেশ অমান্য করলে আইনি ব্যবস্থা নেবার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু সরকারি এই নির্দেশকে মানতে চায়নি উত্তর কলকাতার শোভাবাজার লেনের ৪৫ বছরের যুবক শীর্ষেন্দু মল্লিক। আর রাগের মাথায় পিতা ৭৮ বছরের বৃদ্ধ বংশীধর পুত্রকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে ধরেন। আর তাতেই পুত্রের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শোভাবাজার লেনের বাসিন্দা, ৭৮ বছরের ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন, প্রতি দিন বিকেলে পুত্র শীর্ষেন্দুকে নিয়ে বেড়াতে বেরোন। ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং মৃগী রোগী। এ দিনও তিনি বেরোনোর সময়ে পুত্রকে মাস্ক পরতে বলেন। কিন্তু পুত্র কিছুতেই তা পরতে রাজি হননি। বার বার বলেও রাজি না হওয়ায় তিনি পুত্রের গলায় কাপড় পেঁচিয়ে খুন করেছেন বলে দাবি করেছেন বৃদ্ধ। পুত্রের মৃত্যুর পরেই পিতা বংশীধর পাশেই শ্যামপুকুর থানায় গিয়ে পুরো ঘটনা বর্ণনা করে আত্মসমর্পন করেন বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে। তিনি যে অপরাধ করেছেন তাও পুলিশের কাছে স্বীকার করে নিয়েছেন। বংশীধরবাবুর কাছ থেকে বর্ণনা শুনেই শ্যামপুকুর থানার অফিসারেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, ঘরের মাটিতে পড়ে রয়েছে শীর্ষেন্দুর দেহ আর বিছানায় শুয়ে রয়েছেন এক বৃদ্ধা। তিনি শীর্ষেন্দুর মা। সেরিব্রাল অ্যাটাকের পর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বছর ১৮ ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী তিনি। মায়ের সামনেই ছেলেকে বংশীধরবাবু খুন করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর পরই পুলিশ শীর্ষেন্দুর দেহ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে ময়না তদন্তের জন্য। পুলিশ সুত্রে বলা হয়েছে, একটি হত্যার মামলা রুজু করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত বংশীধরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তকারী এক অফিসার জানিয়েছেন, বেসরকারি সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বংশীধরবাবুর কোনও মানসিক অবসাদের ইতিহাস এখনও পাওয়া যায়নি। তবে মনে করা হচ্ছে, অসুস্থ স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে দীর্ঘদিন থাকার অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্ভবত জুড়ে গিয়েছে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা। ছেলে মাস্ক না পরে বাইরে বেরোলে যদি সংক্রমণ হয়,সেই চিন্তাও তাঁকে গ্রাস করেছিল বলে পুলিশের অনুমান।
মাস্ক না পরায় পুত্রকে খুন করলেন পিতা
0
Share.