করোনা: অক্সফোর্ডের টিকা বানরে কার্যকর, উৎপাদন হবে ভারতে

0

ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গত সপ্তাহে মানুষের ওপর কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করে। সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যেই এই টিকা বাজারে আনতে পারবে তারা। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম লাইভমিন্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা করোনাভাইরাস প্রতিরোধী যে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছে তা উৎপাদনের দায়িত্ব পেয়েছে এই কোম্পানিটি। মঙ্গলবার নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষের ওপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগের আগে অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের তৈরি টিকা ছয়টি বানরের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। তাতে সফলতা মিলেছে।যুক্তরাষ্ট্রের হ্যামিলটনের রকি মাউন্টেন ল্যাবরেটরিজের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ছয়টি বানরের ওপর প্রথমে টিকাটি প্রয়োগ করা হয়। এরপর সেগুলোর দেহে ব্যাপক মাত্রায় নভেল করোনাভাইরাস ঢোকানো হয়। ২৮ দিন পর দেখা গেছে বানরগুলো পুরোপুরি সুস্থ আছে।বানরের ওপর সফল প্রয়োগের খবর পাওয়ার পরপরই সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা মঙ্গলবার জানান, তারা টিকা উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যেহেতু বানরের ওপর টিকাটি কাজ করেছে, সেহেতু মানষের ওপরও তা কাজ করবে বলে আশাবাদী তিনি।পুনাওয়ালা বলেন, অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা ছিল বলেই তাদের সঙ্গে এ কাজে যুক্ত হয়েছি। আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঝুঁকি তো নিতেই হয়।বিশ্বব্যাপী অন্তত ১০০টি বায়োটেক ফার্মা ও বিজ্ঞানী দল করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে গবেষণা করছে। তার মধ্যে পাঁচটি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে মানুষের শরীরে। আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তৈরি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল পাওয়া যাবে। আর তা সফল হবে বলে মনে করেন পুনাওয়ালা। অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, টিকাটি কাজ করছে কিনা শুধু এটুকু দেখাই যথেষ্ট নয়। বরং তাতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা অথবা ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে কিনা তাও দেখতে হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতের পুনে শহরের দু’টি কারখানায় টিকা তৈরির কাজ শুরু হবে। আগামী বছরের মধ্যে ৪০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।পুনাওয়ালা জানান, প্রতি ডোজ টিকার বাজার মূল্য হবে এক হাজার রুপি। তবে ভারত সরকার চাইলে জনগণকে তা বিনামূল্যে দিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কার্যালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এ ব্যাপারে।আগামী চার-পাঁচ মাসের মধ্যে ৩০ থেকে ৫০ লাখ ডোজ টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট। এ জন্য ৩০ থেকে ৪০ কোটি রুপি বিনিয়োগ করা হবে।করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে গবেষণা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার এমন আরও দু’টি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও চুক্তি রয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউটের। অর্থাৎ তাদের তৈরি টিকাও উৎপাদন করবে সিরাম ইনস্টিটিউট। এমন অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটি ৬০০ কোটি রুপি বিনিয়োগ করে আরও একটি টিকা তৈরির কারখানা বানানোর কাজ শুরু করেছে।

Share.