ডেস্ক রিপোর্ট: চীনের গণমাধ্যমগুলোকে দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারি একটি বড় পরীক্ষা যা চীনের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতাকে প্রকাশ করেছে। অনেকটা বিরল এই স্বীকারোক্তি করেন জীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের পরিচালক লি বিন। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে চীনের প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়ে নানা সমালোচনা তৈরি হওয়ার পর এই মন্তব্য আসলো। তিনি বলেন, চীন এখন এর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবে। মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এরই মধ্যে উত্তর কোরিয়াকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে চীন। সাংবাদিকদের লি বিন বলেন, ‘চীনের শাসন ব্যবস্থার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ ছিল এই মহামারি। আর বড় ধরণের মহামারি সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার মধ্যকার দুর্বলতাকে এটি সামনে নিয়ে এসেছে’। চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উহানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি করেছে দেশটি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে সতর্ক করতেও ব্যর্থ হয়েছে। ভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বানও নাকচ করে দিয়েছে চীন। গত এপ্রিলে ইউরোপের এক প্রতিবেদনে, ভাইরাস সংকট নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। একজন চিকিৎসক যিনি কর্তৃপক্ষকে ভাইরাসটি সম্পর্কে ডিসেম্বরেই সতর্ক করতে চেয়েছিলেন তাকে ‘মিথ্যা তথ্য বানাতে’ নিষেধ করা হয়। পরে লি ওয়েনলিয়াং নামে ওই চিকিৎসক কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে উহানের একটি হাসপাতালে মারা যান। বিবিসির এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার এডিটর সেলিয়া হ্যাটন বলেন, ভুল করার বিষয়টি স্বীকার করাটা চীনের নেতাদের ক্ষেত্রে বেশ বিরল। লি বিন বলেছেন, স্বাস্থ্য কমিশন এর পুরো ব্যবস্থাকে কেন্দ্রীয়করণ করে এবং বিশালাকার তথ্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান করবে। ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে দেশে এবং বাইরে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে চীন। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বেশ কয়েক জন প্রাদেশিক এবং স্থানীয় কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে দলটির শীর্ষ কোনও নেতার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। গণমাধ্যমের উপর সেন্সরশিপ এবং রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার আহ্বানের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি বেইজিং। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং আন কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্যের জন্য শি চিন পিংকে অভিনন্দন জানানোর পর দেশটিকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে চীন। উত্তর কোরিয়া বলছে, তাদের দেশে এখনো পর্যন্ত কোনও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এমনিতেই ভগ্নদশা। এর মধ্যে গুরুতর কোনও সংক্রমণ দেখা দিলে তা সামাল দেয়া মুশকিল হয়ে যাবে। খবর বিবিসি।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দুর্বলতার কথা স্বীকার করলো চীন
0
Share.