বিনোদন ডেস্ক: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও সঙ্গীত শিল্পী আজাদ রহমান না ফেরার দেশে চলে গেছেন। শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন এই খ্যাতিমান সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব।তার মৃত্যুতে সঙ্গীত অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাংলা গানের যুবরাজ খ্যাত আসিফ আকবর বরেণ্য এই ব্যক্তিকে নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। গানের জগতে আমার নাম ডাক যাই থাকুক কিছু জায়গায় ঝিনুকের মতো শক্ত খোলসে নিজেকে আটকে রাখি। প্রবল পরাক্রমশালী সঙ্গীতজ্ঞদের সান্নিধ্য পাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সবাই আমাকে কেন যেন খুব দ্রুত তাদের কাছে টেনে নিয়েছেন। বাংলাদেশে শেষ প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে আমিই সবচেয়ে সৌভাগ্যবান। আমার ভেতরে সবসময় একটা ভয় কাজ করে, আর সেটা হচ্ছে সঙ্গীত সম্পর্কে নিজের অজ্ঞতা। একান্তই বাধ্য না হলে আমি দেশের মহীরুহ সঙ্গীতজ্ঞদের ত্রিসীমানায় অযথা ঘোরাঘুরি করিনি কখনও উনাদের সামনে পড়ে গেলে শ্রদ্ধায় নুয়ে পড়েছি বারংবার। সবসময় চেষ্টা করেছি যথাযথ সম্মান জানানোর।গত বছর একটা ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীত সন্ধ্যায় যেতে হয়েছে বাধ্য হয়ে। সঙ্গীতের গুরুজনদের সরব উপস্থিতি থাকায় আমি একেবারে অডিটেরিয়ামের পেছনের সারিতে গিয়ে বসেছি জন্মগত ব্যাকবেঞ্চার হিসেবে। আমাকে স্টেজে ডেকে উত্তরীয় পড়ানো হবে, নাম ঘোষনার পর কোথায় লুকাই সেই চিন্তায় অস্থির ছিলাম। স্টেজ থেকে নেমে সরাসরি গিয়ে সামনের সারিতে বসা আজাদ রহমান স্যারের পায়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সালাম করলাম। তিনি আমাকে বললেন- আসিফ আমি সব খবর রাখি, ভাল হচ্ছে তোমার গান বাজনা। কোন কথা না বলেই চলে এসেছি, একটা ছবি তোলার সাহসও পাইনি। যদিও আজকাল এসবের কোন তোয়াক্কা করেনা বীর সেলফিবাজরা। গায়ের উপর ঝাঁপিয়ে পাড়িয়ে মাড়িয়ে সরি বলে নিজের যোগ্যতায় ছবি তুলে ফেসবুকে অমর হয়ে যায় জীবিতাবস্থায়।আজাদ রহমান স্যারের বাসায় যাবো যাবো করে যাওয়ার সাহস পাইনি। আজ তিনি নিজেই চলে গেলেন, রেখে গেলেন সৃষ্টির আনন্দ। গত কয়েক বছরে আমরা হারিয়েছি সঙ্গীত জগতের অনেক গুনী মানুষ, হয়তো সামনে আরো হারাতে হবে। এখনি সময় দেশের এই রত্নদের নিয়ে আর্কাইভ বানানোর কাজ শুরু করা, এতে ভবিষ্যত প্রজন্ম সমৃদ্ধ হবে জ্ঞানে। মরহুম আজাদ রহমান স্যারের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি… গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি…।
তিনি চলে গেলেন, রেখে গেলেন সৃষ্টির আনন্দ: আসিফ আকবর
0
Share.