ঢাকা অফিস: প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা ও স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসরণ করে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দেশের প্রত্যেকটি জেলায় এখন কোভিড-১৯ সংক্রমিত ব্যক্তি আছেন। কোথাও সংক্রমণের হার কম। কোথাও স্থিতাবস্থায় আছে। আমাদের সবার লক্ষ্য থাকা উচিত দ্রততম সময়ে সংক্রমণের হার হ্রাস করা। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীরে ধীরে সচল করার উদ্যোগ হিসাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে খুলে দেওয়া হয়েছে। ঈদুল ফিতর আসন্ন হওয়ায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনসমাগম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিম্নলিখিত নির্দেশনাগুলো মেনে চলার অনুরোধ করা হলো।
১৩ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে:
১. ব্যাংক খোলার আগে মহামারি প্রতিরোধী সামগ্রী যেমন- জীবাণুনাশক সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করুন। আপদকালীন পরিকল্পনা তৈরি করুন। আপদকালীন সংক্রমিত বস্তুর ডিসপোজাল এলাকায় স্থাপন করুন। সব ইউনিটের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুণ এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণকে জোরদার করুন।
২. কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করুন। প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক ব্যবস্থা নথিভুক্ত করুন এবং যারা অসুস্থ অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা নিন।
৩. ব্যাংকের প্রবেশমুখে তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্র স্থাপন করুন বা তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখুন এবং শুধুমাত্র স্বাভাবিক তাপমাত্রা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ঢুকতে দিন।
৪. বায়ুচলাচল বৃদ্ধি করুন। সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এয়ারকন্ডিশনারের স্বাভাবিক ক্রিয়াকে নিশ্চিত করুন। বিশুদ্ধ বাতাস বৃদ্ধি করুন এবং এয়ারসিস্টেমের ফিরে আসা বাতাসকে বন্ধ রাখুন।
৫. সর্বসাধারণের ব্যবহার্য সুবিধাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন (যেমন-কিউইং মেশিন, কাউন্টার, চিফার মেশিন, রোলার পেন, ক্যাশ কাউন্টার, এটিএম, জনসাধারণের বসার জায়গা ইত্যাদি)।
৬. জনসাধারণের চলাচলের এলাকা যেমন ব্যাংকিং লবি, এলিভেটর এবং তথ্য কেন্দ্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং ময়লা সময়মতো পরিষ্কার করুন।
৭. এটিএম-এ প্রবেশ করার লাইনে দাঁড়ানোর বা ব্যবহারের সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য লাইনে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা স্থাপন করা।
৮. ব্যবসায়িক কাজে ব্যাংকের আসা মানুষের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রতিদিনের ব্যবসায়িক কাজের জন্য ই-ব্যাংকিং অথবা এটিএম ব্যবহার পরামর্শ দিন। কাউন্টার জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা করুন এবং সবাইকে হাত পরিষ্কারের ব্যাপারে সচেতন করুন।
৯. স্টাফদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার জোরদার করতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে। হাতের হাইজিনের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢাকতে হবে।
১০. ব্যাংকে আসা সবাইকে মাস্ক পরতে হবে।
১১. পোস্টার ইলেকট্রনিক্স স্ক্রিন এবং বুলেটিন বোর্ডের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জ্ঞান পরিবেশন জোরদার করুন।
১২. যদি নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী থাকে তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে জীবাণুমুক্তকরণ করতে হবে এবং একইসঙ্গে এয়ার কন্ডিশনিং ও ভেন্টিলেশন সিস্টেমকে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মূল্যায়ন হওয়ার আগে ফের চালু করা উচিত হবে না।
১৩. মাঝারি ও উচ্চ ঝঁকিপূর্ণ এলাকায় ব্যাংকগুলোকে তাদের বিজনেস আওয়ার সংক্ষিপ্ত করতে এবং ব্যাংকে আসা লোকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।