শনিবার, নভেম্বর ২৩

হংকংয়ের বৃটিশ পাসপোর্টধারীদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দিতে পারে যুক্তরাজ্য

0

ডেস্ক রিপোর্ট: হংকংয়ের বৃটিশ পাসপোর্টধারীদের পূর্ণ নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ দেয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাজ্য। চীন যদি ভূখণ্ডটির উপর প্রস্তাবিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন বাতিল না করে তাহলে সেখানকার ‘বৃটিশ ন্যাশনাল (ওভারসিস)’ বা বিএনও পাসপোর্টধারীদের এ সুযোগ দেয়া হবে। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব শুক্রবার এক ঘোষণায় এমনটা জানান। হংকংয়ে বিএনও পাসপোর্টধারীর সংখ্যা ৩ লাখ। তারা কোনো ভিসা ছাড়াই সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করতে পারে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।খবরে বলা হয়, হংকংয়ের উপর রাষ্ট্রদ্রোহ-বিরোধী জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে চীন। বৃহ¯পতিবার আইনটির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে চীনা সাংসদরা। সমালোচকরা বলছেন, এই আইন ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতির আওতায় হংকং স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা ভোগ করে তা খর্ব হবে।প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হংকংকে হস্তান্তর করে বৃটেন। সে সময় ওই নীতির আওতায় ভূখণ্ডটি পরিচালিত হবে বলে সম্মত হয় দুই পক্ষ। এই নীতির আওতায় চীনের কাছ থেকে বেশ খানিকটা স্বায়ত্ত্বশাসন ভোগ করে হংকং।হংকংকে চীনের আকছে হস্তান্তরের সময় এর নাগরিকদের বিএনও পাসপোর্ট দিয়েছিল বৃটেন। এরপর বহুবার এই নাগরিকরা যুক্তরাজ্যের পূর্ণ নাগরিকত্ব পাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বৃটিশ সরকার ওই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। গত বছর ১ লাখের বেশি বিএনও পাসপোর্টধারী হংকংবাসী পূর্ণ নাগরিকত্ব পাওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করে। তখন বৃটিশ সরকার জানায়, ওই পিটিশনে সাড়া দিয়ে তাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেয়া হংকংকে হস্তান্তরের সময় চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের করা চুক্তির লঙ্ঘন হবে। তবে এখন নিজেদের অবস্থান পাল্টানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশটি। শুক্রবার রাব জানান, চীন যদি প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে সামনে আগায় তাহলে হংকংয়ের বিএনও পাসপোর্টধারীদের জন্য ছয় মাস ভ্রমণের সময়সীমা তুলে নেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, চীন যদি এই পথে এগিয়ে যায় ও জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি প্রণয়ন করে, তাহলে আমরা বিএনও পাসপোর্টধারীদের জন্য যুক্তরাজ্যে ছয় মাস ভ্রমণের সময়সীমা প্রত্যাহার করে নেবো। যুক্তরাজ্যে এসে কাজ ও পড়াশোনা করার জন্য তাদের ১২ মাস থাকার সুযোগ দেবো। এর ফলে ভবিষ্যতে তাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ সুগম হবে।প্রসঙ্গত, গত বছর হংকংয়ে চীনের প্রভাবের বিরুদ্ধে ও অধিকতর গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভ করে লাখ লাখ মানুষ। ওইসব বিক্ষোভকারীদের টার্গেট করেই নতুন আইনটি তৈরি করা হয়েছে। এর আওতায়, চীনের জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে এমন সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হবে হংকংয়ে। এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে চীন থেকে বিচ্ছিন্নতা, সন্ত্রাসবাদ ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়া, এই আইন হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা পরিচালনার সুযোগ দেবে চীনকে। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের নিরাপত্তা বাহিনী ওইসব সংস্থা পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে। বৃহস্পতিবারের ভোটে আইনটি পাসের পথ সুগম হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই একটি চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে পাস করা হতে পারে।চীনা পার্লামেন্ট আইনটির প্রতি সমর্থন প্রকাশের পর এর বিরুদ্ধে নিন্দা প্রকাশ করে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। চার দেশের ওই যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত আইনটি চীন ও হংকংয়ের মধ্যকার বিদ্যমান নীতিমালার পরিপন্থী।হংকংয়ের উপর নিরাপত্তা আইনের চেষ্টা চীনের জন্য এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০০৩ সালে একইরকম একটি আইন প্রণয়নের চেষ্টা করে চীন সরকার। তবে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে আইনটি প্রণয়ন বাতিল করা হয়।

Share.