ঢাকা অফিস: কোভিড-১৯ সংকটে জনগণের দুর্বিসহ পরিস্থিতির মাঝেই সরকারের বাস ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।রোববার দুপুরে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের পক্ষে এ দাবি জানিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে বাস ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জনগণকে জিম্মি করে সরকারের রক্তচোষার নীতি।দীর্ঘ লকডাউনে বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে চলাচল শুরু করতে যাওয়া বাসের ভাড়া ৮০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ। রোববার ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।বাস ভাড়া বৃদ্ধির বিরোধিতা করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা নীতি- আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিষ্ঠিত কর্মসূচি। জনগণকে জিম্মি করে রক্তচোষার নীতি এদের একমাত্র চালিকা শক্তি।’তিনি বলেন, করোনার আঘাতে জনজীবন মহাবিপর্যয়ের মধ্যে। দিন আনে দিন খায় মানুষ, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এর ওপর বাস ভাড়া বৃদ্ধি ওই নিরন্ন ও বিপন্ন মানুষের ওপর কষাঘাত।রিজভী বলেন, বাস চালুর আগেই বাস ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তেই প্রমাণিত হয় এই সরকার শোষণ ও গরিব মারার যন্ত্র।তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তথ্যমন্ত্রী বলেছেন- ত্রাণ নিতে আসার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। তার এই বক্তব্য ফরাসি বিপ্লবের সময়ের ষোড়শ লুইর স্ত্রী কথাই মনে পড়ে যায়- ‘রুটি নাই তো কি হয়েছে, কেক খাবে।’‘জনগণের ক্ষুধা, হাহাকার, কর্মহীনতা আমলে না নিয়ে সারাক্ষণ এই সরকার জনগণকে নিয়ে উপহাস করতেই ব্যস্ত’ -যোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব।বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে ছুটি প্রত্যাহার করা হয়েছে-আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তার এই বক্তব্যে গোটা জাতি বিস্মিত ও হতবাক হয়েছে।
রিজভী বলেন, যে বিশেষজ্ঞগণ ‘মৃত্যু-বীজ’ ছড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন, তারা কোন বিষয়ের ওপর বিশেষজ্ঞ সেটাই এখন অনুসন্ধানের বিষয়। এরকম বিশেষজ্ঞ ভারতের মত দেশে পাওয়া গেল না কেন? সেখানে কেন ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ রাখা হয়েছে?
বিএনপি মুখপাত্র বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আইএলওর নির্দেশনা অমান্য এবং করোনা নিয়ে সরকার গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির মতামত সরাসরি অগ্রাহ্য করে সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। গণবিরোধী সরকার কখনোই গণমুখী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর ১০ দিন পর দেশে প্রথম করোনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, একদিনেই দেশে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৪৫ জন। এ পর্যজন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬৫০ জনের। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ হাজার ১৫৩ জন।করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সরকার কয়েকদফা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। গতকাল থেকে সেই ছুটি শেষ হয়েছে। আজ থেকে অফিস আদালত শুরু হয়েছে।
বাসভাড়া ভাড়ানো জনগণকে জিম্মি করে সরকারের রক্তচোষা নীতি: বিএনপি
0
Share.