কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম, এলাকাবাসীর বাঁধায় ৩ বার কাজ বন্ধ

0

বাংলাদেশ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে এলাকাবাসীর ৩ বার বাঁধার পরেও কাজ চলমান রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কম পরিমানে সিমেন্ট বালু দেয়া, ওয়াটার লেবেল না করা, পুরাতন ইট-রড ব্যবহার করা, সঠিক মাপে বেস ও বিম ঢালায় না করাসহ নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করার। সোমবার শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের নামোজগন্নাথপুর-ফিল্টের হাটে কমিউনিটি ক্লিনিকের নির্মাণ কাজে গ্রামবাসীর অভিযোগের সত্যতা মিলেছে সরেজমিন পরিদর্শনে। স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ও ৩ বার কাজ বন্ধ করেও কোন প্রতিকার পায়নি এলাকাবাসী। উল্টো এখনও চলমান রয়েছে নির্মান কাজের। এতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় চরমভাবে হতাশ নামোজগন্নাথপুর-ফিল্টের হাট গ্রামের জনসাধারণ। গ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী মো. জাফর ইকবাল জানান, গত ১৭ই রমজান এলাকাবাসী কাজে প্রথম বাঁধা দেয়। কারন বেস ঢালায় ৫ ফিট ৬ ইঞ্চি হওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে সাড়ে ৩ ফিট/৪ ফিট। ঢালায় কাজে সিলেকশন বালুর কোন বালায় নাই। এমনকি পুরাতন রডের বালা দিয়েই ঢালায় এবং ওয়াটার লেবেল ছাড়াই ১০ ইঞ্চির ঢালায় ৫/৬ ইঞ্চি দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ড্রয়িং অনুসারে কাজ হচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের জানালেও কোন কাজ হয়নি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সাংসদ ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলকে অভিযোগ দেয়ার পর মৌখিকভাবে কাজ বন্ধ করার কথা বললেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি৷ এমনকি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাকিব রাজু আজকাল বলে কালক্ষেপণ করছেন এবং এখন পর্যন্ত নির্মাণ কাজ দেখতেই আসেনি। গ্রামবাসীর অভিযোগ, কাজ বন্ধ করার পর গ্রামবাসীর পক্ষে ৫ সদস্যের একটি কমিটি দেয়া হয়। কমিটির এক সদস্য ও দুর্লভপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাসান আলীর ইন্ধনেই এলাকাবাসীর বাঁধার মুখেও কাজ চলছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আ.লীগ নেতা হাসান আলী জানান, আমি এই কাজের ভালো মন্দ বুঝি না। তাই কাজ কেমন হচ্ছে এব্যাপারে আমি কিছুই জানি না এবং আমার কোন দায়িত্ব নেয়। তবে আমিও চাই, কাজটি ভালোভাবে হোক।গ্রামের মোড়ল মো. শফিকুল মন্ডল বলেন, গ্রামবাসী ৩ বার বাঁধা দিয়েছে। তাও বাঁধা না মেনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কাজের শুরু থেকেই পুরাতন রড, ইট, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন পঞ্চাশোর্ধ মুখলেসুর রহমান। গ্রামের আরো কয়েকজন বাসিন্দা জানান, মাটির নিচে থাকবে এমন কুর্সিও ৫ ইঞ্চি করে দেয়া হয়েছে। অথচ এটি ১০ ইঞ্চি হওয়ার কথা। এবিষয়ে দুর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাকিব রাজু মুঠোফোনে জানান, আমি নিজে উপস্থিত হতে পারিনি। কিন্তু ফোনে কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি, কাজ ভালোই হচ্ছে। সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ আলদাভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সাংসদ ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন, এবিষয়ে আমি  একটি অভিযোগ পেয়েেছি। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আওয়ামীলীগ নেতা, ঠিকাদার, সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক না কেন, স্বাস্থ্য খাতে সরকারি কাজে কোন অনিয়ম করলে ছাড় দেয়া হবে না।

Share.