ইকো নেটওয়ার্ক জবি টিমের উদ্যোগে ওয়েব সেমিনার অনুষ্ঠিত

0
বাংলাদেশ থেকে জবি প্রতিনিধি: ইকো নেটওয়ার্ক দ্বারা সংগঠিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জলবায়ু ও দুর্যোগ স্টাডি ইউনিট (জেএনইউ-সিডিএসইউ) এবং ঢাকা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট (ডিআইডিএম) এর যৌথ উদ্যোগে “Nature, Ecosystem services and Hazards: Sustainable Approach” বিষয়ের উপর ওয়েব সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৬ জুন (শুক্রবার) রাত ৮ টায় সেমিনারটি শুরু হয় যা ইকু নেটওয়ার্ক এর অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে লাইভে সম্প্রচার সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ অনুষ্ঠিত হ‌য়। (https://www.facebook.com/econetwork.org/videos/265457981377708/) অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে আরও ছিলেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ইকু নেটওয়ার্কের সদস্য তাহযিবা মাসুদ (সাফা)। উক্ত ওয়েব সেমিনারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের  ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা এই করোনা মহামারীকে বিভিন্ন ভাবে ফেস করছি এর মধ্যে একটা হচ্ছে আমরা অনেকেই মনে করছি প্রকৃতির মধ্যে পরিবর্তন আসছে।  আমরা যদি মনে করি এই পেন্ডেমিক প্রকৃতিক পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের জোগান দিচ্ছে এটার এক ধরনের ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে! আমরা কেউ কেউ বলছি আমাদের বাতাসের শহরকেন্দ্রিক দূষণ কমে যাচ্ছে, এটি ঠিকে রয়েছে কিন্তু আমরা যদি বাংলাদেশের উদাহরনের দিকে যদি দেখি তাহলে শহর কেন্দ্রিক মানুষ গুলো যখন গ্রামে যাচ্ছে তাহলে গ্রামের  ইকোসিস্টেমের উপর এর প্রভাব পরছে। আমরা হয়তো শহরের পরিবেশ একটু ভালো পাচ্ছি কিন্তু গ্রামের মানুষের বেড়ে যাবার কারণে গ্রামের ইকোসিস্টেমের উপর  এর প্রভাব পরছে। সুতরাং এটা পজিটিভ ভাবার কোনো কারন নাই কেননা যদি কোনো সময় মহামারীর পাশাপাশি দূর্ভিক্ষ হয়। তাহলে মানূষ তখন আর প্রকৃতি প্রেমিক থাকবে নাহ তখন মানুষ বাঁচার জন্য বায়োডাইভারসিটি  নষ্ট করে ফেলবে। তখন মানুষের বেঁচে থাকাই হবে মুখ্য বিষয় । সুতরাং এই অবস্থা এটা বলা যাবে নাহ পেন্ডেমিক আমাদের পরিবেশে যেটা ভারসাম্য করছে সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে। যদিও প্রাকৃতিক পরিবেশ সুস্থ হচ্ছে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকার জন্যে তারপরও যদি মহামারীর সাথে দূর্ভিক্ষ দেখা দেয় তাহলে এটা আমাদের জন্য রক্ষা করা অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে পরবে। তিনি আরো বলেন, করোনা মহামারীর পাশাপাশি দূর্ভিক্ষ দেখা দিলে মানুষ আর প্রকৃতি প্রেমিক থাকবে না। অপর বক্তা ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, আমরা আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে পরিবেশকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছি কিন্তু এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি হচ্ছে আপনি পরিবেশের যে সব জিনিসের উপর নির্ভর করছেন আর পরিবেশ যা আপনাকে জোগান দিচ্ছে সেগুলো ব্যবহার করার সময় যেনো পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয়। আমরা জানি সম্পদ দুই প্রকার নবায়নযোগ্য ও অনবায়ন যোগ্য। নবায়নযোগ্য সম্পদ আমরা ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারি কিন্তু অনবায়নযোগ্য সম্পদ ইচ্ছা মতো ব্যবহার করতে পারবো নাহ  কেননা অনবায়নযোগ্য সম্পদ সীমিত। অনাবায়নযোগ্য সম্পদকে নষ্ট করে ফেললে এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি আর থাকে নাহ। পরিবেশের দূষন কে কমিয়ে যদি পরিবেশকে তার ঠিক জায়গায় রাখা যায় সেটিই হবে এনভায়রোন মেন্টাল সাস্টেইনএবলিটি । এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটির সাথে পাবলিক হেলথ এর একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছে এটি প্রানী থেকে এসে মানুষের দেহে সংক্রমিত করে মানুষকে আক্রান্ত করছে । আমরা প্রানিদের হ্যাবিটেট গুলো নিজেদের প্রয়োজনে ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা চিন্তা না করে ধবংস করে দিতেছি। এসব কারনেই জুনোটিক পেন্ডেমিক গুলো আসছে। কখনো বলা হয়ে থাকে ১০০ বছর পর পর এই মহামারী গুলো হচ্ছে। আমরা এখন সেই মহামারীর মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন পরিবেশকে দূষন মূক্ত করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে চাইলে আমাদের মানুসিক পরিবর্তন আনতে হবে । আমাদের মধ্যে যারা সমার্থ্যবান আছে তাদের চেষ্টা করতে হবে পরিবেশকে দূষণ না করে যে পন্য (অরগানিক প্রোডাক্ট) গুলো আছে সেগুলো বেশি করে  উৎপাদন করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, ইকো নেটওয়ার্ক পরিবেশ সংক্রান্ত তরুণদের নিয়ে একটি ভলেনটিয়ার অর্গানাইজেশন। ওয়েব সেমিনারে প্রকৃতি, ইকোসিস্টেম ও দূর্যোগ এই তিনটার সাথে সম্পর্ক করে কীভাবে পরিবেশেকে সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায় এবং দূর্যোগের সময় সহাবস্থান নিশ্চিত করা যায় এইসব বিষয়সমূহ উপস্থাপন করা হয়। চলমান করোনা মহামারির সময়ে পরিবেশগত পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করতেই আয়োজন করা হয়েছিলো এই ওয়েব সেমিনারটি।

Share.