ঢাকা অফিস: বোরকা পরে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদ। আজ বুধবার (১৫ জুলাই) ভোরে বোরকা পরে ছদ্মবেশে সে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। গ্রেপ্তারের আগে নদী পার হয়ে ভারতের পালানোর জন্য নদী তীর দিয়ে ছদ্মবেশে ঘুরছিলেন সাহেদ। তা দেখে নদীতে মাছ ধরা স্থানীয় জেলেরা ভেবেছিলেন পাগল। নৌকাও একটা পেয়েছিলেন। কিন্তু বিধি বাম। নৌকার মাঝি তাকে পার করতে রাজি হননি।এরই মধ্যে র্যাবের গাড়ি চলে আসে। র্যাবের উপস্থিতি লক্ষ্য করে উপায় না দেখে শাখরা কোমরপুর ব্রিজের পাশে একটি ছোট্ট ড্রেনে লুকিয়ে পরেন সাহেদ। ছদ্মবেশে বোরকা পরে ড্রেনে লুকিয়েও শেষ রক্ষা হলো না। তখনই তাকে র্যাবের বিশেষ দল গ্রেফতার করে বলে জানান র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বুধবার সকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে সীমান্ত এলাকাগুলোয় র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি ছিল। খবর পেয়ে আমাদের গোয়েন্দা পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম তার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আর কিছুক্ষণ দেরি হলে হয়ত তাকে আর পাওয়া যেত না।বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাহেদ এই সাতক্ষীরারই ছেলে।গত ৬ ও ৭ জুলাই উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল এবং রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান দপ্তরে র্যাবের অভিযানের পর থেকে তিনি লাপাত্তা ছিলেন। কোভিড-১৯ পরীক্ষার প্রতিবেদন নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়ার পর ওই হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। জানা যায়, ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে চিকিৎসা দিয়ে আসা এ চিকিৎসালয়ের লাইসেন্সের মেয়াদই পার হয়ে গেছে বহু আগে। অভিযানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট, করোনাভাইরাস চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পর রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়। র্যাবের ওই অভিযানের পর রিজেন্টের মালিক মোহাম্মদ সাহেদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবরও সংবাদমাধ্যমে আসতে শুরু করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক পরিচয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কীভাবে তিনি নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন, সেসব তথ্যও এখন গণমাধ্যমে আসছে। রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর ৭ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রতারণার অভিযোগে সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব। সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তার ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়।ওই মামলায় সে সময় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাহেদসহ ৯ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে সাহেদের অন্যতম সহযোগী, রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বোরকা পরে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা : জেলেরা ভেবেছিল পাঘল
0
Share.