আবার বিশ্বরেকর্ড, একদিনে বিশ্বে আক্রান্ত ২,৬০,০০০

0

ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্বে একদিনে বা ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নতুন রেকর্ড গড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শনিবার বলেছে, ২৪ ঘন্টায় বিশ্বে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৬০ হাজার। করোনা মহামারি শুরুর পর এত বিপুল সংখ্যক মানুষ একদিনে আক্রান্ত হননি এর আগে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কোয়ার্টার মিলিয়ন পেরিয়ে গেল। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। ওদিকে ১০ই মের পর থেকে একদিনে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন বিশ্বে। এ সংখ্যা ৭৩৬০। নতুন করে করোনা বা ভাইরাসে আক্রান্তের রেকর্ড হয় এর একদিন আগে।শনিবার সব মিলিয়ে বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৪০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এ সময়ে মারা গেছেন কমপক্ষে ৬ লাখ মানুষ। জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির রেকর্ড এটা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু রাজ্যে, দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে শুরুর দিকে লকডাউন বা মাস্ক পরার ওপর কোনো গুরুত্ব দেয়া হয়নি। ফলে ফ্লোরিডা, টেক্সাস ও অ্যারিজোনাতে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মহামারির এপিসেন্টার হয়ে উঠেছে ফ্লোরিডা। এই রাজ্যে শনিবার নতুন ১০ হাজার মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। মারা গেছেন কমপক্ষে ৯০ জন। সব মিলে এ রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে ৩ লাখ ৩৭ হাজার। আর মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৫ হাজার। এর মধ্যে এ রাজ্যের হাসপাতালগুলো থেকে সতর্কতা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, হাসপাতালগুলোর আইসিইউ রোগীতে পূর্ণ। নতুন কোনো রোগী নিতে অক্ষম তারা। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, করোনা ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মাস্ক পরার মতো ইস্যুগুলো যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ মাত্রায় রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ছোঁয়াচে রোগ বিষয়ক শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউসি রাজ্য ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের প্রতি শুক্রবার আহ্বান জানিয়েছেন লোকজনকে জোর করে মাস্ক পরানোর ব্যবস্থা নিতে। তবে এরপর প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি মাস্ক পরাকে বাধ্যতামুলক করবেন না। ওদিকে করোনা ভাইরাস ও তা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপকে উচ্চ মাত্রায় রাজনীতিকরণ করা হয়েছে ব্রাজিলেও। সেখানে অব্যাহতভাবে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এ সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা করেছে, সেখানে গাণিতিক সূচকীয় গতিতে বাড়ছে না আক্রান্তের সংখ্যা। তবে বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা ভারত নিয়ে সতর্কতা দিয়েছেন। তারা বলছেন, কয়েক মাসের মধ্যে ভারতে এই সংক্রমণ তার ‘পিক’-এ বা শীর্ষে পৌঁছাতে পারে, যদিও দেশটিতে বিশ্বের তৃতীয় সর্ববৃহৎ সংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সবচেয়ে খারাপ মুম্বই, ব্যাঙ্গালোরের হাসপাতালগুলোর অবস্থা। এসব হাসপাতাল রোগীতে উপচে পড়ছে। শনিবার ২৪ ঘন্টায় ভারতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৮৮৪ জন। মারা গেছেন ৬৭১ জন। ওদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় একদিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।তবে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো করোনা ভাইরাস বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। এখন তারা তাদের সীমান্ত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছে। তবে স্পেনে স্থানীয় পর্যায়ে সংক্রমণ বেড়েছে। সেখানে সবচেয়ে বাজে অবস্থা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ক্যাটালোনিয়া রাজ্যে। এ অঞ্চলে আরো এক দিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বার্সেলোনা, লা নেগুয়েরা এবং এল সেগ্রিয়ার প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে ১৫ দিন ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ১০ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ বা প্রাইভেট মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নার্সিং হোমে ভিজিট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জিম ও নাইটক্লাব। মাত্র চার সপ্তাহ আগে সারাদেশে লকডাউন থেকে বেরিয়ে এসেছে স্পেন। তারা আশা করছে অর্থনীতিকে সচল করতে, বিশেষ করে পর্যটনের দিকে বেশি নজর দিয়েছে। অনেক অধিবাসী নির্দেশ অমান্য করলেও শনিবার বার্সেলোনার রাস্তা ছিল অনেকটাই ফাঁকা। স্পেনে সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে প্রতিবেশী ফ্রান্স তার সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার কথা বিবেচনা করছে।

Share.