ঢাকা অফিস: লাইসেন্স ছাড়া ব্লাড ব্যাংক, ক্রস ম্যাচিং ছাড়াই রক্ত পরিসঞ্চালনসহ নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার দায়ে এবার বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব হেলথ সায়েন্সের (বিআইএইচএস) কাছে কৈফিয়ত তলব করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।পাশাপাশি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ডায়াগনস্টিক ও ব্লাড ব্যাংক কার্যক্রম।রাজধানীর দারুসসালামে অবস্থিত বিআইএইচএস বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ডায়াগনস্টিক, ব্লাড ব্যাংকসহ হাসপাতাল কার্যক্রম কেন বন্ধ করা হবে না- সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে।বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২৯ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি পরিদর্শন টিম ওই প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিন পরিদর্শন করে। এ সময় পরিদর্শন দলের সদস্যরা দেখতে পান, সেখানে অদক্ষ ও অযোগ্য নন-মেডিকেল ব্যক্তি দিয়ে রোগীদের রক্ত ও অন্যান্য নমুনা সংগ্রহণ করা হচ্ছে। ল্যাবের রি-এজেন্ট সংরক্ষণাকারী ফ্রিজের তাপমাত্র নিয়ন্ত্রণ করা হয় না। ল্যাবরেটরি কক্ষ অপরিস্কার, অপরিচ্ছন্ন এবং অপরিচ্ছন্ন জিনিসপত্রে ঠাসা। সেখানে নেই কালার কোড অনুযায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা। এমনকি একই পাত্রে রাখা হয় ধারাল, সংক্রামক ও অন্যান্য মেডিকেল বর্জ্য।এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির হাসপাতালে পরিদর্শন দল গিয়ে নানা অসঙ্গতি দেখতে পান। শয্যা সংখ্যা অনুপাতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য জনবলের অনুপস্থিতি। অপারেশন থিয়েটারে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই। এছাড়া নারকটিকের অনুমোদন নেই, পরিবেশ ছাড়পত্র পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ। এমনকি আয়কর রিটার্ন দাখিল করার জন্য টিআইএন পর্যন্ত নেই।প্রতিষ্ঠানটির ব্লাড ব্যাংক চলছে লাইসেন্স ছাড়াই। সেখানেই চলছে রক্ত পরিসঞ্চালন। রোগীর শরীরে সঞ্চালিত রক্তের স্ক্রিনিং এমনকি ক্রস ম্যাচিংয়ের কোনো তথ্য বা কাগজপত্রও পায়নি পরিদর্শন দল।বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব হেলথ সায়েন্স পরিদর্শনে পরিদর্শক দল সেখানে ৫ ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট এবং ৭ প্রকার মেয়াদোত্তীর্ণ অস্ত্রোপচার সরঞ্জাম পেয়েছে। সেগুলো হল- ভিট্রোস ভিাটামিন বি১২, ভিট্রোস এফএসএইচ, টোটাল টি৩, সিমেন ইউএন ৬৮.০ এমএল, এডিবিএআই কেমিস্ট্রি এএসটি ৩৮.০ এমএল। এন্ডাট্রাকেল টিউব, ওউন্ড ড্রেনেজ টিউব, বিএমআই ফিডিং টিউব, গাইডেড এয়ারওয়ে, সোফরা-টুলে গজ, স্কিন ক্লোজার টেপ এবং সাকশন ক্যাথেটার।অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম রোগীদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই ‘দি মেডিকেল প্রাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরি (রেগুলেশন) অর্ডিনেন্স ১৯৮২’ অনুযায়ী ডায়াগনস্টিকের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে। পাশপাশি প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না- সেটি আগামী ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।এছাড়া নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন-২০০২ অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইসেন্স ছাড়া ব্লাড ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এবার রাজধানীর একটি ব্লাড ব্যাংক ও ডায়াগনস্টিক বন্ধ
0
Share.