ঢাকা অফিস: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে শিগগিরই আবেদন করবে তার পরিবার। একই সঙ্গে আবেদনে বিদেশে নেয়ার অনুমতি চাওয়া হবে। বিএনপি মনে করছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে সরকারের এখানে শর্ত রয়েছে। কিন্তু সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সরকার হয়তো কঠোর অবস্থানে থাকবে না। শেষ পর্যন্ত মানবিক বিবেচনায় মেয়াদ বাড়ানোসহ বিদেশ যাওয়ার অনুমতি মিলতে পারে। দলটির দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ছয় মাসের মুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সপ্তাহ দুয়েক আগে আবার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার একজন আইনজীবী বলেন, এখন করোনা মহামারী চলছে। এটা আরও লম্বা সময় ধরে চলবে। সবচেয়ে বড় কথা, এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়া মুক্তির কোনো শর্ত ভঙ্গ করেননি। ফলে তার ব্যাপারে সরকার কঠোর হবে না বলেই তার পরিবার মনে করছে। জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও তেমন উন্নতি হয়নি। চলাফেরাও করতে পারছেন না। মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আবেদন তো করতেই হবে। তবে কখন করব সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন যুগান্তরকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ম্যাডামের যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না। তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য দ্রুত সরকারের কাছে আবেদন করবে তার পরিবার।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তখন আশা করি সরকার বিবেচনা করবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তি হয়েছে নির্বাহী আদেশে। এটি ছয় মাসের জন্য দেয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন যদি আবার আবেদন করেন, তখন সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে। তিনি আরও বলেন, তাকে বা তার পক্ষে এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তারপর যাচাই শেষে তা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, দলীয় চেয়ারপারসনকে কোথায় উন্নত চিকিৎসা দেয়া হবে, তা নির্ভর করছে তার পরিবারের ওপর এবং তিনি নিজে কী চান। এখন অনেক দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝেই হয়তো পরিবার পদক্ষেপ নেবে।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার কথা বলে আসছেন। ঈদুল আজহার দিন তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, বিদেশে না যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে শর্ত দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার বিদেশে চিকিৎসাই এখন বেশি প্রয়োজন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন, সেই সুযোগের অপেক্ষায় আছি।খালেদা জিয়ার চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। হাত ও পায়ের ব্যথা একই রকম আছে। ডায়াবেটিস কোনো কোনো সময় ১১, আবার কোনো সময় ৯ থাকে। অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। মুক্তির দিন থেকেই খালেদা জিয়া আইসোলেশনে আছেন। তিনি বলেন, তাকে চিকিৎসার জন্য তো বিদেশে নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে তা কীভাবে সম্ভব। আবার সরকারের অনুমতিরও প্রয়োজন রয়েছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে শিগগিরই আবেদন
0
Share.