ঢাকা অফিস: দেশে মহামারীর প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই রোজ নিয়ম করে স্বাস্থ্য বুলেটিন প্রচার করে আসছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রোজ বেলা আড়াইটায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন পদস্থ কর্মকর্তা এ বুলেটিন নিয়ে হাজির হন। এতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে দেশে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার পরিসংখ্যান এবং বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া নিয়ম করে বিভিন্ন সচেতনতামূলক বার্তা দেয়া হয়। লোকজন অধীর আগ্রহে টিভি সেটের সামনে বসে থাকেন এ বুলেটিন শোনার জন্য। কিন্তু হঠাৎ করে এই বুলেটিন প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অচিরেই তা বন্ধ করা হচ্ছে বলে সোমবার জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বুলেটিন প্রচারের বদলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান তুলে ধরা হবে। দেশে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়ে যাওয়া এবং প্রায় প্রতিদিনই ৩০-এর বেশি মৃত্যুর মধ্যে এ বুলেটিন প্রচার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মনে প্রশ্ন– কেন এই সিদ্ধান্ত? স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র বলছে, মূলত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিন বন্ধ হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটায় এখন আর এমন বুলেটিন প্রচার করার প্রয়োজন দেখছেন না তারা। তার ভাষায়, ‘চার-পাঁচ মাস ধরে তো বুলেটিন প্রচার হলোই। এখন তো আল্লাহর রহমতে পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো। আমরা মনে করি, এখন সংক্রমণ কমে আসছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে। এ কারণে আমাদের সিদ্ধান্ত নিয়মিত একজন ব্যক্তি দিয়ে বুলেটিন না করে প্রেস রিলিজ দেয়া।’ দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিন প্রচার করে আসছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর। পরে স্বাস্থ্য অধিদফতর এ দায়িত্ব নেয়। কোনো কোনো দিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই কথা বলেছেন বুলেটিনে।শুরুতে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং চলছিল। একপর্যায়ে তা অনলাইনে গেলেও সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল।কিন্তু গত ৮ এপ্রিল সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার সুযোগ বন্ধ রেখে শুধু প্রতিদিন বেলা আড়াইটায় বুলেটিন চালু রাখা হয়েছিল।শুরুতে এ ব্রিফিংয়ে আসতেন আইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। মাঝেমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৎকালীন পরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদও আসতেন বুলেটিনে।হঠাৎ এই দুজন বুলেটিনে কথা বলা বন্ধ করে দেন। পরে অধিকাংশ দিনই সর্বশেষ তথ্য নিয়ে হাজির হচ্ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. নাসিমা সুলতানা। বুলেটিন বন্ধ হয়ে গেছে দেশবাসী ও গণমাধ্যমকর্মীদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠতে হবে। এখন থেকে দৈনিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটা লিখিত প্রেস রিলিজ আকারে আসবে। এটি দুয়েক দিনের মধ্যেই কার্যকর হয়ে যাবে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
যে কারণে বন্ধ হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিন
0
Share.