‘সম্ভাব্য ব্যাপক রোহিঙ্গা নির্যাতনের’ তদন্ত করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

0

ডেস্ক রিপোর্ট: শুরু থেকে রোহিঙ্গা গণহত্যার কথা অস্বীকার করে এলেও প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপকহারে নির্যাতনের কথা প্রকারান্তরে স্বীকার করল মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এক বিবৃতিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর সম্ভাব্য বড় পরিসরের নির্যাতনের বিষয়ে তদন্ত করছে তারা। সরকারের একটি প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে এ তদন্ত শুরু করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।রাখাইনে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের সেই ঘটনাকে   ‘গণহত্যা’ বলে জাতিসংঘ মন্তব্য করলেও, অভিযোগ অস্বীকার করে দেশটির সেনবাহিনী। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতা ঠেকাতে এমন অভিযান চালিয়েছে বলে দাবি করে তারা। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স ও সংবামাধ্যম ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।তবে গত মঙ্গলবার মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানায়, ‘রাখাইনে বড় আকারের নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’সরকারের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২০১৬-১৭ সালের অভিযোগ ওঠা নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।’দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রকাশিত এক বিবৃতির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রাখাইনে ২০১৭ সালের আগে ও পরে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো সম্ভাব্য ব্যাপক নির্যাতনের বিষয়ে তদন্ত করছে তারা। তাদের দাবি, সাধারণ রোহিঙ্গা নয় বরং সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে সেনারা। একইসঙ্গে কয়েকটি গ্রামে সংঘটিত অপরাধের জন্য কয়েকজন সেনা সদস্যকে সামরিক আদালতে বিচারের দাবি করলেও তাদের ঠিক কী সাজা দেওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রমাণাদি নষ্টের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তবে জাতিসংঘ বলছে, রাখাইনসহ বিভিন্ন প্রদেশে এখনো সশস্ত্র অভিযানের নামে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর আগে মিয়ানমার সরকারের একটি তদন্ত কমিশন এক প্রতিবেদনে দেশটির কিছু সেনাসদস্যকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। সেনাবিহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘মংগদু এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়টি এ তদন্তে যুক্ত করা হয়েছে।’ তবে তদন্তের বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি তারা।গত সপ্তাহে মিয়ানমারের দুই সেনাসদস্যকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে হাজির করা হয়। গত জুলাই মাসে এ দুই সেনা এক ভিডিওতে রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় গ্রামবাসীকে হত্যার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন। ওই দুই সেনাসদস্যকে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের সাক্ষী হিসেবে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে হাজির করা হতে পারে।

Share.