ডেস্ক রিপোর্ট: চীনা ভিডিও অ্যাপ টিকটককে নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকায় পরিষেবা চালু রাখতে হলে কোনও মার্কিন সংস্থার কাছে বেচে দিতে বলেছিলেন। পরে তা নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়। সংশয় তৈরি হয়েছিল, তেমন কোনও পদক্ষেপ করলেও তাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সম্মতি দেবেন কি না। ২০ সেপ্টেম্বর তার দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন, আমেরিকায় পরিষেবা চালিয়ে যেতে টিকটক বা তার মূল সংস্থা বাইটড্যান্স যে চুক্তি করতে চলেছে, তাতে তার সমর্থন রয়েছে।হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, বাইটড্যান্স, মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থা ওরাকল এবং ওয়ালমার্ট হাত মিলিয়ে একটি নতুন সংস্থা তৈরি করবে। আমেরিকায় টিকটক-এর কাজকর্ম পরিচালিত হবে নতুন সংস্থার মাধ্যমে। নাম হবে টিকটক গ্লোবাল।পরে মার্কিন ট্রেজারি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘মার্কিন ব্যবহারকারীদের তথ্যের ও প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা সুনিশ্চিত রাখতে মূল ভূমিকা নেবে ওরাকল। তারা এবং ওয়ালমার্ট প্রয়োজনীয় তথ্য, শর্তাবলি জমা দেওয়ার পর আমেরিকার বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি তাতে ছাড়পত্র দিলে চুক্তিতে অনুমোদন দেওয়া হবে।’এর আগে রবিবার থেকে অ্যালফাবেট আইএনসি-র গুগল এবং অ্যাপল আইএনসি-র মার্কিন অ্যাপ স্টোর থেকে টিকটক সরিয়ে দেওয়ার যে সময়সীমা ছিল, তা এক সপ্তাহ বাড়িয়ে দেওয়ার কথা জানায় মার্কিন বাণিজ্য দপ্তর। অর্থাৎ এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তিনটি সংস্থাকে চুক্তি চূড়ান্ত করতে হবে।বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একটি সূত্র জানিয়েছে, টিকটক গ্লোবাল-এর ৫৩ শতাংশ শেয়ার থাকবে মার্কিন লগ্নিকারী ওরাকল ও ওয়ালমার্টের হাতে। বাইটড্যান্সের হাতে থাকবে ৩৬ শতাংশ। তার মধ্যে ওরাকল ১২.৫ শতাংশ শেয়ার নেবে বলে জানিয়ছে। টিকটক জানিয়েছে, ওরাকল এবং ওয়ালমার্ট একটি টিকটক গ্লোবাল প্রি-আইপিও ফাইন্যান্সিং রাউন্ডে অংশ নেবে, যেখানে তারা সংস্থায় ২০% মোট শেয়ার কিনতে পারবে। বাকি ৮০% থাকবে বাইটড্যান্সের হাতে। কিন্তু টিকটক গ্লোবাল চালু হলে সংস্থার শেয়ার বাইটড্যান্সের অংশীদারদের মধে্য ভাগ হয়ে যাবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। উল্লেখ্য, বাইটড্যান্সের ৪০% শেয়ার মার্কিন লগ্নিকারীদের দখলে। ট্রাম্প সাফ বলেছেন, নতুন সংস্থার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে ওরাকল ও ওয়ালমার্টের। মার্কিন প্রশাসন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা এবং ব্যবহারকারীদের তথ্যের গোপনীয়তা নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল, নতুন চুক্তিতে তার নিরসন হবে বলে খুশি টিকটক কর্তৃপক্ষ। ট্রাম্পও জানান, নতুন চুক্তিতে আমার সম্পূর্ণ সমর্থন, শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ দিয়েছি। চুক্তির এই ধরনও আমার পছন্দ হয়েছে। নতুন সংস্থা তৈরি হবে টেক্সাসে। অন্তত ২৫ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। একশো শতাংশ নিরাপদও থাকবে। প্রায় দশ কোটি আমেরিকান টিকটক ব্যবহার করে। কিন্তু তাদের তথ্য চীনের হাতে চলে গিয়েছে বলে আশঙ্কা মার্কিন প্রশাসনের। টিকটক গ্লোবাল-এ মার্কিন ডিরেক্টররাই হবেন সংখ্যাগরিষ্ঠ। চিফ এগজিকিউটিভও হবেন আমেরিকান। পরিচালন পর্ষদে থাকবেন একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞও। ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত কিনা, টিকটক সোর্স কোড খতিয়ে দেখে জানতে পারবে ওরাকল।বিষয়টি নিয়ে ওয়ালমার্টের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। চুক্তির ফলে অন্তত পাঁচশো কোটি ডলার মার্কিন শিক্ষা তহবিলে আসা উচিত বলে ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু তেমন কোনও আইনি সংস্থান নেই বলে জানান আইনজীবীরা। সরাসরি না হলেও আইপিও বাজারে ছাড়লে ঘুরপথে তার মাধ্যমে ওই অর্থ উঠে আসতে পারে। চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট। তার মতে, চুক্তি বাস্তবায়িত হলে টেক্সাসে সংস্থার সদর দপ্তর খোলার আদর্শ পরিবেশ রয়েছে।
আমেরিকায় বন্ধ হচ্ছে না টিকটক
0
Share.