দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সুদারুদের অত্যাচারে শিক্ষক ও প্রবাসী পরিবার হুমকির মুখে

0

বাংলাদেশ থেকে দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে দাদন ব্যবসায়ী ও সুদারুদের অত্যাচারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও প্রবাসী পরিবার হুমকির মুখে ন্যায় বিচার ও প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্ত ভুগিরা। দিনাজপুর প্রেস ক্লাবে ১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার কয়েকজন শিক্ষক, প্রবাসী পরিবার, গ্রামের সাধারন জন সাধারন একত্রিত হয়ে এই দাদন ব্যবসায়ী ও সুদারুদের ব্যাক্তিদের বিপক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করেন । দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জের নিজপাড়া ইউনিয়নের খলসী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশপুর গ্রামের ইউনুস আলীর পুত্র ইসমাইল হোসেন ও চকবানারশী গ্রামের দাউস আলীর পুত্র প্রবাস ফেরৎ যুবক আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এই লিখিত বক্তব্যে বলেন, উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের জগদীশপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের পুত্র সোহেল রানা চমক, আঃ হানিফের পুত্র ইসমাইল হোসেন, ফজলুল হকের পুত্র আমির আলী একত্রিত হয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী চক্র গড়ে তুলেছে। বিভিন্ন অপকর্মসহ সুদের ব্যবসা, ফাঁকা চেকের পাতায় জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া, মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো এবং এলাকায় সুষ্ঠ শান্ত পরিবেশ নষ্ট করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, মানুষকে বিপদে ফেলে টাকা উপার্জন করাই তাদের প্রধান কাজ। তাদের অপকর্মে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছুদিন পূর্বে বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ কমিটির সচ্ছতার মাধ্যমে সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ হয়। এলাকার দাদন ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন ও তার সহযোগী ফারুক হোসেন নামে এক যুবককে না জানিয়ে তার স্বাক্ষর জাল দিয়ে প্রতিপক্ষ বানিয়ে নিয়োগ বন্ধের চেষ্টায় আদালতে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে নিষেধাজ্ঞার ১টি মামলা দায়ের করে। কিন্তু ফারুক হোসেন তা জানতে পেরে আদালতে উপস্থিত হয়ে তার স্বাক্ষর জাল করার ঘটনা খুলে বলে মামলাটি খারিজের আবেদন করলে আদলত শুনানি শেষে নিষেধাজ্ঞার মামলাটি খারিজ করে দেয়। গত ২৯ ফেব্রুয়ারী বিদ্যালয় ছুটির পর অফিসে দাপ্তরিক কাজ করা কালে সোহেল রানা চমক ৫/৭ জন
অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদে নিয়ে উপস্থিত হয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করলে তার ভয়ভীতি প্রর্দশন করে ড্রয়ার ভেঙ্গে চেক বই বের করে ফাঁকা চেকের পাতায় জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে চলে যায়। ঘটনাটি তাৎক্ষনিক বিদ্যালয়ের সভাপতি সহ ম্যানেজিং কমিটিকে জানালে তাদের নির্দ্দেশে সোহেল রানা চমকসহ অজ্ঞাত ৫/৭ জনকে আসামী করে বীরগঞ্জ থানায় চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করা হয়। যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলা নং ৫০/২০। তিনি আরোও লিখিত বক্তব্যে বলেন, সোহেল রানা চমক রাজাকার বংশের সন্তান চমক মামলার পরে ঐ চেকের পাতা দিয়ে প্রধান শিক্ষকের নামে আদালতে দশ লক্ষ টাকার একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করাচ্ছে। সে একই জমি ৩/৪ জনের কাছে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে মানুষের সাথে প্রতারনা করলে ভুক্তভোগীরা র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করে। র‌্যাব তার বাড়িতে তল্লাসী চালালে ও দীর্ঘদিন পালিয়ে ছিলো। চমক এলাকায় চিটার নামে পরিচিত। ১৯৭১ ইং সালে তার চাচা মৃত ছিদ্দিক মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষণসহ এলাকায় বিভিন্ন হিন্দু পরিবারের বাড়ী ঘর লুটপাট ও অন্যায় অত্যাচারের কারনে সে সময় মুক্তিবাহিনী প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। এসময় তার সাথে থাকা ছিদ্দিকের এক ভগ্নিপতি দৌড়ে পালিয়ে বেচে যায়। এদের অন্যতম সদস্য জামায়াত নেতা আঃ হানিফ এর পুত্র বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের প্রধান ইসমাইল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কিশোর লাইব্রেরীর অন্তরালে দাদন/সুদের রোশানলে চকবানারশী গ্রামের প্রবাসী দাউস আলীর স্ত্রী মাজেদা বেগম এর কাছ থেকে কৌশলে চেক বইয়ে স্বাক্ষর নিয়ে তার এক আত্মীয় পাল্টাপুর ইউনিয়নের পিকপাড়া গ্রামের মনির উদ্দিনের পুত্র আব্দুর রশিদকে বাদী বানিয়ে মাজেদা বেগম এর নামে ছয় লক্ষ টাকার মিথ্যা মামলা আদালতে দায়ের করে এবং তাদেরই পুত্র প্রবাস ফেরৎ যুবক আতিকুর রহমান এর কাছ থেকেও ১ লক্ষ টাকার একটি চেকের পাতায় স্বাক্ষর নিয়ে ৪ লক্ষ টাকা দাবী করে। ইসমাইল হোসেনের চেকের মিথ্যা ঘটনা স্থানীয় ভাবে বিচার না পেয়ে আদালতের স্বরনাপন্ন্য হওয়ায় তার চামচা বাহিনীর অত্যাচারে ও মিথ্যা মামলায় পরিবারটি আজ হুমকীর মুখে রয়েছে। ইসমাইল হোসেন একসময় খলসী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি থাকা কালে তার চাহিদার টাকা না পেয়ে মূর্খতার পরিচয় দিয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের ১ মাসের বিলের ফাইলে স্বাক্ষর না করে তাদের ক্ষতি করে। যার কারনে পরে শিক্ষক কর্মচারীদের বাধার মুখে পুনরায় সভাপতি হতে না পেরে সে এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। দুস্কৃতকারী চক্রের অন্যতম হোতা শিক্ষক আমির আলীর সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়। যাকে এলাকায় সুদারু আমির নামে সকলে চিনে। এই কুচক্রি মহলটি নিয়োগের ঘটনায় মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে পত্রিকাসহ ফেসবুকে প্রচার ও প্রকাশ করে। মিথ্যা বানোয়াট ঐ তথ্য প্রচারের তীব্রনিন্দা, ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রতিবাদ সহ এদের নানা অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমরা শিক্ষক, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা সংবাদের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট এহেনো নির্যাতনকারী, দুর্নীতিবাজ, সুদখোর কুচক্রি মহলের কর্মকান্ডের প্রতিকার ও বিচার সহ আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে লিখিতো বক্তব্য পাঠকালে উপস্থিত ছিলেন আতিকুর রহমান, মাজেদা বেগম, ফারুক হোসেন, আব্দুর রউফ মাষ্টার, খায়রুল ইসলাম, রসুল আলী, শাহজাহান আলী, আব্দুল কাদের প্রমুখ ।

Share.