‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ আজ

0

ঢাকা অফিস: ১৯৭৫ সালের ‘সৈনিক-জনতা অভ্যুত্থান’ স্মরণে আজ শনিবার ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন করবে বিএনপি। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ঐতিহাসিক এই দিনে সৈনিক ও জনতা মিলে তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে ঢাকার সেনানিবাসের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেন; যা পরবর্তী সময়ে তাঁর ক্ষমতায় আসার পথ সুগম করেছিল। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালনের জন্য সীমিত আকারে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। দিবসটি পালনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। এ ছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতারা দুপুর ১২টায় এবং উত্তরের নেতারা সাড়ে ১২টায় জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। দিনটি উপলক্ষে বিকেল ৩টায় ভার্চুয়াল আলোচনার আয়োজন করবে দলটি। এ ছাড়া বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলো আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ছবির প্রদর্শনী এবং সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামার আহ্বান: ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন, ‘মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আমি দেশবাসী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। তাদের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করি।’ “’৭৫-এর ৭ নভেম্বর সৈনিক-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে আমাদের মাতৃভূমি প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীন অস্তিত্ব লাভ করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত হয়। স্বদেশবাসীর জাগরিত দৈশিক চেতনায় পরাজিত হয় আধিপত্যকামী শক্তির অশুভ ইচ্ছা। ১৯৭৫ সালের এই দিনে স্বাধীনতার চেতনায় আধিপত্যবাদী শক্তির নীলনকশা প্রতিহত করে এ দেশের বীর সৈনিক ও জনতা। সম্মিলিত প্রয়াসে জনগণ নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠে। ৭ নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছি। আইনের শাসন, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে এসেছিল। দেশ, জনগণ, স্বাধিকারসহ স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী সুগভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। এই বিপ্লবের মাধ্যমে জাতি পেয়েছিল এক যোগ্য নেতৃত্ব জিয়াউর রহমানকে, যিনি একাত্তরের জাতির চরম ক্রান্তিলগ্নে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। সফল রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষ ঘটিয়ে জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়েছিলেন। আর সে জন্যই আমাদের জাতীয় জীবনে এই বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম।”‘আজকের এই মহান দিনে আমি দেশবাসী সবাইকে আহ্বান জানাই, যে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৭৫ সালে আমরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেই একই চেতনাকে বুকে ধারণ করে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় আবার সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান অবৈধ সরকারের চরম প্রতিহিংসার শিকার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে দেশকে আবারও স্বাধীনতা পরবর্তীকালের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি করতে যে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, তা থেকে উত্তরণে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আসতে হবে। দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ। আর ৭ নভেম্বরের চেতনাই হচ্ছে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিশ্চিত করা, স্বাধীনতার সুফল তথা অর্থনৈতিক মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা, সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।’

Share.