ঢাকা অফিস: জামালপুরের হতদরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার ৩১৫ হতদরিদ্র পরিবারে গরু বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে ৪০ হাজার টাকা দামের একটি করে গরু দেয়া হয়েছে। বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির কুড়িগ্রাম ও জামালপুর জেলার ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠির দারিদ্র্যতা হ্রাসকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এসব গরু দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার মির্জা মোস্তফা মিনি স্টেডিয়াম মাঠে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদ এই গরু বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে গরু বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব রেজাউল আহসান, জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল মনসুর, ডা. রিয়াজুল ইসলামসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের আওতায় জামালপুর ও কুড়িগ্রামের আট উপজেলার ২৫ হাজার হতদরিদ্র সুফলভোগী পরিবারকে ৪০ হাজার টাকা দামের একটি গরু ও গরু লালন পালনের জন্য প্রতি মাসে ৫০০ টাকা হারে ছয় মাসে তিন হাজার টাকা নগদ দেয়া হবে। এতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এলাকায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমবে এবং প্রাণীজ আমিষের সরবরাহ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।এছাড়া এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের উৎপাদিত পণ্য প্রক্রিয়াজাত ও বিপণনের জন্য আটটি উপজেলায় আটটি কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ (এপিএম) কেন্দ্র স্থাপন এবং ১২ জন প্রান্তিক মৎস্যজীবীকে নদীতে খাঁচায় মৎস্য চাষের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার এক হাজার ৭৮৫ জন এবং কুড়িগ্রামের তিনটি উপজেলায় এক হাজার ৩২১ পরিবারের মাঝে গাভী বিতরণ করা হয়েছে। গরু পেয়ে চরপাকেরদহ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চায়না আক্তার বলেন, “আমরা নদী ভাঙা মানুষ। আঙ্গোর এই দুনিয়ায় কিছুই নাই। পুনায়ের বাপ যেদিন কামায় করে ওই দিন খাই। আর যেদিন কামায় না করে ওই দিন না খায়ে থাকি। এহন গরু পাইলাম। এডা গতি অইলো। গরুডারে পালমু। এর দুধ বেচলেও কয়টা টেহা পামু। সংসারে কিছুডা অইলেওতো উপকার হয়লো।” ঝাড়কাটা গ্রামের শফিকুল বলেন, “আঙ্গরে সংসার তেমন নাই। দিন আনি দিন খায়। গরুডা পাইলাম। এইডারে পালমু। দুধের যে দাম পুলাপানরে দুধ খাওয়াবের পায় নে। এই গরুর দুধ পুলাপানরে খাওয়ানি যাবো, আবার বেচবেরও পামু। খুব উপকার হইলো আঙ্গরে।”
জামালপুরে তিন শতাধিক পরিবারে গরু বিতরণ
0
Share.