শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

0

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুরা যাতে আবার তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে আসতে পারে এবং তাদের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পুনরায় শুরু করতে পারে, সে জন্য সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে ভালো দিন আসতে পারে, আমাদের শিশুরা তাদের স্কুলে যেতে সক্ষম হবে, তারা স্বাভাবিকভাবে তাদের পড়াশোনা শুরু করবে। আমরা সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে মিরপুর সেনানিবাসের জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজে শেখ হাসিনা কমপ্লেক্স ডিএসসিএসসিতে জাতীয় প্রতিরক্ষা কোর্স-২০২০ এবং সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধ কোর্স-২০২০-এর স্নাতক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।সরকারপ্রধান বলেন, সরকার কোভিড-১৯-এর জন্য স্কুল খুলতে পারছে না এবং অনলাইন ও টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সর্বোপরি, শিশুরা যদি তাদের স্কুলে যেতে না পারে তবে এটি তাদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে।এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে সরকার যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। তিনি আবারও করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।

‘সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকুন’:বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাসী এবং শান্তি চায় উল্লেখ করে, প্রধানমন্ত্রী দেশের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হলে প্রতিউত্তর দিতেও সর্বদা প্রস্তুত থাকার ওপর জোর দেন তিনি।শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করতে আসে তাহলে অবশ্যই আমাদের পাল্টা আঘাত করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এর জন্য আমাদের প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্যকে এটি সর্বদা মনে রাখা প্রয়োজন।’এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের ১০ লাখেরও বেশি নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে কখনো সংঘাতের পথে যায়নি। বিষয়টি সমাধান করার জন্য আমরা আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। তিনি আরো বলেন, বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশ দ্রুত এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে কারণ মিয়ানমারের এই নাগরিকরা দেশের জন্য একটি বড় বোঝা।প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং বিশ্ব অঙ্গনে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।

‘মানুষের জন্য কাজ করুন’: প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্যকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান কারণ মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই দেশে সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম হয়েছিল। দেশের মানুষের পাশে থেকে তাদের জন্য কাজ করতেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।  কোভিড-১৯ মহামারিসহ দেশের সব সংকটে সশস্ত্র বাহিনীর কাজের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, লাখ লাখ মানুষের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। এই ত্যাগ অবশ্যই বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। এই স্বাধীনতা আমাদের সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যাবে।এ সময় ‘ভিশন-২০২১’, ‘ভিশন ২০৪১’ ও ‘ডেল্টা প্লান-২১০০’সহ দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।শেখ হাসিনা আরো বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারলেও, বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশকে এখনো উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সরোয়ার হাসান বক্তব্য দেন।বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনার কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি  আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার পর ১৭ মার্চ স্কুল, কলেজসহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে অনলাইনে ক্লাস চলছে।তা ছাড়া চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান, প্রাথমিক সমাপনী ও সমমান এবং জেএসসি ও সমমান পরীক্ষা বাতিল করে সরকার।বর্তমানে অফিস-আদালতের কার্যক্রম ধীরে ধীরে চালু হয়ে গেলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো খুলে দেওয়া হয়নি।

Share.