ঢাকা অফিস: গরু পাচারকণ্ডে এবার বিএসএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ড্যান্ট, ডেপুটি কম্যান্ড্যান্ট ব়্যাঙ্কের দুই অফিসারসহ মোট ৪ জনকে তলব করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। চলতি সপ্তাহে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে চারজনকেই। সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য ওয়াল জানিয়েছে, এই চার জন এক সময় মুর্শিদাবাদসহ বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায় কর্মরত ছিলেন। ইতিমধ্যেই বিএসএফ অফিসার সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। গতমাসের ১৭ তারিখে ম্যারাথন জেরার পর তাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তারও আগে সেপ্টেম্বর মাসে সতীশ কুমারের সল্টলেকের বাড়িতে প্রথম হানা দিয়েছিলেন সিবিআই। এরপর তার বাড়ি এবং মানিকতলার এক ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানো হয়। সতীশ কুমার ধরা পড়ার পরে অনেকেই বলেছিলেন, তার সূত্র ধরে আরও ধরপাকড়ের সম্ভাবনা তৈরি হল। সেটাই যে সত্যি হল, তার প্রমাণ এই ঘটনা। জানা গেছে, মালদায় সতীশ কুমার বিএসএফের দায়িত্বে থাকার সময় প্রায় ২০ হাজার গরু বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেগুলি কমদামে পাচারকারীদের বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। তারপরে সেগুলো ফের বাংলাদেশে পাচার করার অভিযোগও উঠেছে। প্রতিবার পাচারের সময় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকায় রফা হত বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছে সিবিআই। এই কাজে কাস্টমসের অনেক কর্তাও যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ। সিবিআই সূত্রের মতে, বিএসএফ কমান্ড্যান্টেদের এই একের পর এক গ্রেফতারি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ গরু পাচারের যে বিশাল জাল, তাতে শুধু নিচুতলার বিএসএফ কর্তারাই জড়িত নয়। বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের অনেকে জড়িয়ে থাকতে পারেন এতে। ফলে এই গ্রেফতার আরও বড় চক্রের হদিস দিতে পারে। সবার আগে গরু পাচার কাণ্ডে মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল হককে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। নানা টালবাহানার পরে দিন তিনেক আগে আসানসোলের সিবিআই আদালতে আত্মসমর্পণ করে গরুপাচারকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এনামুল। ওই দিনই আবার আসানসোলের সিবিআই আদালতে পেশ করা হয় ধৃত বিএসএফ কমান্ড্যান্ট সতীশকুমারকে। দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার পরিকল্পনা করছেন সিবিআই কর্তারা। দু’পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল জবাব শোনার পর এনামূলকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।সতীশকুমারকে পাঠানো হয় ১১ দিনের জেল হেফাজতে। সেপ্টেম্বর থেকেই রাজ্যে গরু পাচার নিয়ে সক্রিয় হয় সিবিআই। মালদহ ও মুর্শিদাবাদের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চলে, সল্টলেকেও আসেন সিবিআই কর্তারা।জানা গিয়েছিল, এনামুলদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে বিএসএফ ও কাস্টমসের এক শ্রেণির কর্তার। শুধু তাই নয়। এও জানা গিয়েছিল, গরুগুলিকে আটক করার পর তার সাইজ ছোট করে দেখানো হত। সেই সময়েই অনেকে বলেছিলেন, কাদের বল-ভরসায় এনামুলরা এই পাচার চক্র চালাত তা খতিয়ে দেখতে চাইবে সিবিআই।
গরু পাচারে বিএসএফের আরও চার কর্মকর্তাকে তলব সিবিআই’র
0
Share.