বাংলাদেশের এক সময়কার জনপ্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের পাশে শিল্পীরা

0

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের এক সময়কার জনপ্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। বলা চলে চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের শেষ দিকের নয়ক তিনি। এ অভিনেতা চলচ্চিত্রে নেই বহু বছর ধরে। দুই যুগ ধরে কাজ করে যাচ্ছেন নিরাপদ সড়কের জন্য। আন্দোলন করছেন সড়কে বিশৃঙ্খলা ও সচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে। তবে সড়কের শৃঙ্খলা ফেরা নিরলস পরিশ্রমি এ মানুষটি যখন কাজ করছেন তখন কিছু স্বার্থন্বেষী শ্রমিক নেতা ও শ্রমিকদের রোষানলে পড়েছেন। চলতি বছরের ১ নবেম্বর থেকে নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হয়েছে। আর আইন সংস্কারের দাবিতে পরিবহন শ্রমিকরা কর্মবিরতিও পালন করেছেন। সবাই যেন আইন মেনে চলেন এমনটি রাজধানীর পথে পথে ঘুরে গাড়ি চালকদের সচেতনার জন্য কাজ করছেন নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। এতেই বাদ সাদেন শ্রমিক নেতারা। রাজপথে কাঞ্চনের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়, পোড়ানো হয় তার ছবি। সামাজিকভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা চলছে বিভিন্নভাবে। তবে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে জানানো হচ্ছে প্রতিবাদ। দেশের লাখ লাখ মানুষ দাঁড়িয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চনের পাশে। দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিও। ব্যক্তিগতভাবে কিছু তারকারাও ইলিয়াস কাঞ্চনের অপমানের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নায়ক রুবেল বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করে যাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তার সঙ্গে দেশের মানুষ রয়েছেন। তাকে নিয়ে যেসব মানুষ বাজে পোস্টা ছাপিয়েছে তারা নোংরা মনের পরিচয় দিয়েছেন। আমি এই ঘটনার প্রতিবাদের পাশাপাশি তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।’ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, ‘কাঞ্চন ভাইয়ের পাশে শিল্পী সমিতি থাকবে। যারা নিরাপদ সড়ক চায় না তারা দেশের ও সমাজের শত্রু। যারা ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইকে অপমান করেছে তাদেরকে শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। কাঞ্চন ভাই র্দীঘদিন ধরে মানুষকে সচেতন করে আসছেন, এটা আমাদের গর্বের বিষয়।’ চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক বলেন, ‘সারাদেশের মানুষ নিরাপদ সড়ক চয়। এটার বিরোধিতা করার কোনো কারণ নেই।’ নায়ক শাহরিয়াজ বলেন, ‘আমাদের একজন ইলিয়াস কাঞ্চন আছেন। একজন শিল্পী কোন পদ, গদি কিংবা ক্ষমতার আশায় নয়, সুস্থ নিরাপদ জীবনের জন্য সকলের জন্য কাজ করে যাওয়ার নিদারুণ দৃষ্টান্ত। সারাদেশের মানুষ সবাই নিরাপদ সড়ক চাই।’ এ ছাড়া অনেক সাধারণ মানুষও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে আছেন বলে সমর্থন জানাচ্ছেন। শরিফুল হাসান নামে একজন লিখেছেন, ‘সিনেমার নায়করা যে হঠাৎ কখনো বাস্তবের নায়ক হতে পারেন বাংলাদেশে তার জীবন্ত প্রমাণ ইলিয়াস কাঞ্চন। প্রিয় নায়ক, নিরাপদ সড়কের জন্য আপনি অনেক করেছেন, কিন্তু আপনাকে প্রাপ্য সম্মানটা আমরা দিতে পারিনি। অন্তর থেকে ভালোবাসা আপনার জন্য।’

উল্লেখ্য, ইলিয়াস কাঞ্চন নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করে আসছেন দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে। ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রীও সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ১৯৯৩ সালে। এরপর ইলিয়াস কাঞ্চন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন শুরু করেন। সেই থেকে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলন চলছে।

Share.