ডেস্ক রিপোর্ট: কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশ অন্টারিও, বৃটিশ কলম্বিয়া, আলবার্টা এবং কুইবেকে নাটকীয়ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হাসপাতাল, নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ব্যাপকহারে চাপ পড়ছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ সরকারি বিভিন্ন বিধিনিষেধ দেওয়া সত্ত্বেও করোনাভাইরাস কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কানাডায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, জানুয়ারিতেই কোভিডে মৃত্যু বিশ হাজারে পৌঁছতে পারে। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ সারা কানাডায় যেভাবে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, আগামী সপ্তাহগুলোতে হাজার হাজার নতুন সংক্রমণ এবং হাজার হাজার অতিরিক্ত মৃত্যুর পূর্বাভাস আশংকা করা হচ্ছে। কানাডার পাবলিক হেলথ এজেন্সি (পিএইচএসি) দ্বারা প্রকাশিত নতুন মডেলিং থেকে জানা যায়, জনগণ যদি বাইরের মানুষের সংগে তাদের যোগাযোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, তাহলে সংক্রমণের সংখ্যা ট্রিপলের চেয়ে বেড়ে দৈনিক ৩০ হাজারেরও বেশি হতে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কানাডিয়ানরা যদি কেবলমাত্র তাদের বাড়ির বাইরের লোকজনদের সাথে যোগাযোগের বর্তমান স্তরটি বজায় রাখে, সে ক্ষেত্রে সংক্রমণের সংখ্যা এখন দৈনিক ৭ হাজার ৯শ থেকে বেড়ে প্রায় দৈনিক ১৩ হাজার হয়ে যাবে। এদিকে অন্টারিও প্রদেশের সর্ববৃহৎ শহর টরন্টোর মেয়র জন টরি পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের দাবি করেছেন। স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাকে ভেঙে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করতে এটা জরুরি বলে জানান তিনি। টরন্টো মেয়র বলেন, আমি চাই বিগ-বক্স স্টোরসহ আরও ব্যবসা বন্ধ থাক, যাতে করে মানুষ বাইরে বেরোনোর কারণ কম দেখাতে পারে। বসন্তে অনেক কিছুই বন্ধ ছিল এবং আমরা তার ভালো ফল পেয়েছিলাম। নিয়ম ভঙ্গকারীদের শাস্তির ওপরও জোর দেন জন টরি। তবে এটাও স্বীকার করেন যে, এটা করার মতো যথেষ্ট সম্পদ আমাদের নেই। তাই জনগণ যাতে আগের মতোই নীতিমালা মেনে চলেন তাদের প্রতি সে আহ্বান জানান তিনি। জন টরি বলেন, প্রদেশের পক্ষ থেকে শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত আসে সেটা এই মুহূর্তে খুব বেশি বিবেচ্য নয়। এখন যেটা দরকার তা হলো আমাদের ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ কাজে লাগানো এবং যতটা সম্ভব ঘরে থাকা। সংক্রমণ রোধে কুইবেকের মতো কারফিউ জারির পক্ষে মেয়র বা শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কেউই মত দেননি। ডা. এইলিন দ্য ভিলা বলেন, সংক্রমণ রোধে কারফিউ কার্যকর কিনা তার স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ আমাদের হাতে নেই। তবে কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার পর কর্মীদের আইসোলেশনের সময়টুকুতেও বেতন দেওয়া গেলে তাদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। জন টরি বলেন, প্রদেশের পক্ষ থেকে নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হলে বাড়তি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা টরন্টো তা বিবেচনা করে দেখবে। তবে সমগ্র প্রদেশের জন্য বা অন্তত অঞ্চলের জন্য নিয়ম করে দিলে সেটা বেশি কার্যকর হয়। এছাড়া বিশেষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের এখতিয়ার সিটি কর্তৃপক্ষের রয়েছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। উল্লেখ্য, কানাডায় আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ১৫ হাজার ৭২জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮ হাজার ১২০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ২৩ হাজার ৩৩ জন। অন্যদিকে দেশটির সরকার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুততম সময়ে কিভাবে নাগরিকদের টিকার আওতায় আনা যায় তার ওপর গুরুত্বারোপ করছে।
কানাডায় আংশিক লকডাউন সত্ত্বেও করোনা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না
0
Share.