ডেস্ক রিপোর্ট: সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনও দল। সরকার গঠনের উদ্দেশে জোট গঠনের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় বিজেপি ও অন্য দলগুলো। এরমধ্যে শনিবার আকস্মিকভাবে এনসিপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় বিজেপি। ওই সরকার গঠনকে অবৈধ বর্ণনা করে খোদ এনসিপি মুখপাত্র বলেন, ফ্লোর টেস্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হবে তারা। ওইদিনই সরকার গঠন চ্যালেঞ্জ করে ভারতের শীর্ষ আদালতে আবেদন করে শিব সেনা, কংগ্রেস ও এনসিপি।আবেদনের শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট বুধবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে বিধানসভায় নির্বাচিত ২৮৮ জন আইনপ্রণেতার সকলকে শপথ নেওয়ার আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়, রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির তাৎক্ষণিকভাবে একজন অস্থায়ী স্পিকার নিয়োগ করবেন। তিনি আইনপ্রণেতাদের শপথ পড়াবেন। পরে ফ্লোর টেস্টের মধ্য দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। ফ্লোর টেস্টের ভিডিও রেকর্ড রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় এক টুইট বার্তায় এনসিপি মুখপাত্র নবাব মালিক বলেন, ‘সত্যের জয় হয়েছে। বিজেপির খেলা শেষ’। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস, এনসিপি ও শিবসেনাকে নিয়ে জোট গঠনের চেষ্টায় সামনে রয়েছেন মালিক। এই দলগুলোর মধ্যে নুন্যতম সাধারণ একটি কর্মসূচির আওতায় ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন তিনি। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর পদত্যাগের ঘোষণা দেন মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সাংবাদিকদের বলেন, অজিত পাওয়ার আমার কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। প্রথম দিন থেকেই বিজেপি কোনও ঘোড়া বেচাকেনায় না থাকার কথা বলে আসছে। আমরা সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কারণ এনসিপি আমাদের সঙ্গে ছিল। তিনি পদত্যাগ করায় আমিও পদত্যাগ করলাম। গত মাসে অনুষ্ঠিত মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ২৮৮টি আসনের মধ্যে বিজেপি পায় ১০৫টি আসন। তবে সরকার গঠনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে তাদের আরও ৪০ আসনের প্রয়োজন ছিল। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দেয় ১৭০ আইনপ্রণেতার সমর্থনের চিঠি পাওয়ার ভিত্তিতে রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি বিজেপি’কে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। ওই আইনপ্রণেতাদের মধ্যে ছিল অজিত পাওয়ারের এনসিপি’র ৫৪ আইনপ্রণেতা। শনিবার সকালে বিজেপি ও অজিত পাওয়ারের জোট সরকার গঠনের ঘোষণা দেওয়ার পর মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। নানা নাটকীয়তার পর বিকেলে প্রত্যাহার করা হয় রাষ্ট্রপতির শাসন। আর রাত আটটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। উপমুখ্যমন্ত্রী হন অজিত। এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়েছে, আদালতের আদেশের পর এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে অস্থায়ী স্পিকারের ভূমিকা। কনভেনশন অনুযায়ী বিধানসভার সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য অস্থায়ী স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের মধ্যে বালাসাহেব থোরাট একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে অষ্টমবার বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন।
‘বিজেপির খেলা শেষ’, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ
0
Share.