ঢাকা অফিস: নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার গাড়িবহরে হামলা ও ডিম নিক্ষেপ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে ফেনীর দাগনভূঞার জিরো পয়েন্ট এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন কাদের মির্জা।দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ জানান, এ ঘটনায় সফরসঙ্গী বসুরহাট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম (৫০) আহত হয়েছেন বলে মৌখিক অভিযোগ করেছেন কাদের মির্জা। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা অভিযোগ করে বলেন, ‘চট্টগ্রামে শপথ নিতে যাওয়ার পথে দাগনভূঞার জিরো পয়েন্টে একদল সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্ত হত্যার উদ্দেশে আমার গাড়িবহরে হামলা করে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে একটা ট্রাক থাকার কারণে আমার গাড়িটা দ্রুত যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে, যার জন্য আমার গাড়িতে কিছু করতে পারেনি। আমার পেছছড়িতে কিছু করতে পারেনি। আমার পেচগেলে আরনে আরো ১০ থেকে ১২টি গাড়ি ছিল, সেগুলোতে হামলা করা হয়েছে, ইট-পাটকেল মারা হয়েছে, ডিম মারা হয়েছে। সেলিম নামের আমাদের আওয়ামী লীগের একজন নেতা আহত হয়েছেন।’
কাদের মির্জা আরো বলেন, ‘শুধু আজকের ঘটনা নয়, এই ফেনীতে অতীতে একরাম ভাইকে প্রকাশ্য দিবালোকে জ্বালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একরামের মতো আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। দাগনভূঞাতে ফখরুল ইসলাম নামের একটা ছেলেকে ২০১৮ সালে প্যানেল মেয়র সাইফুলের নেতৃত্বে দাগনভূঞা উপজেলার চেয়ারম্যান দিদারের বাহিনী ও সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। আজ ফেনীতে যে হত্যার রাজনীতি চলছে, আমি আগেও বলেছিলাম এটা বন্ধ করার জন্য। কিন্তু আজ কেন বন্ধ করা হচ্ছে না, কাদের ইঙ্গিতে আজ নিজাম হাজারীরা, একরাম চৌধুরীরা এত দাপট দেখায়, এত দাপট দেখিয়ে তাঁরা আমাদের ওপর হামলা করার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। এদেশে কি সরকার নেই? এদেশে কি প্রশাসন নেই? এটার কি বিচার হবে না?বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আরো বলেন, ‘ফেনীতে একরামকে যারা হত্যা করেছে, দাগনভূঞাতে ফখরুলকে যারা হত্যা করেছে, তারা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘোরাফেরা করে। যাদের নির্দেশে হত্যা করা হয়েছে, তারা এখন প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বসুরহাট থেকে দাগনভূঞাতে গরিবদের সিএনজি আসতে দেওয়া হয় না। তেলের জন্য এলে তাদের টাকা দিতে হয়, সেখানে পুলিশকে টাকা দিতে হয়, নিজাম হাজারীর লোকদের টাকা দিতে হয়।’
কাদের মির্জা বলেন, ‘আজ আমাদের এলাকার কি কোনো অভিভাবক নেই? কেউ কি প্রতিবাদ করার মতো নেই? আমরা যাকে মন্ত্রী বানিয়েছি এদেশের, এই এলাকার জন্য, সে মন্ত্রীর কাজ কী? সেই মন্ত্রী অপশক্তির কাছে আজ মাথানত করেছেন।’কাদের মির্জা আরো বলেন, ‘আজ আমি স্পষ্ট ভাষায় বলব, এই শপথ থেকে আমি আমার এলাকায় ফিরে গিয়ে আমি অনতিবিলম্বে নোয়াখালীতে অপরাজনীতি বন্ধ করার দাবিতে, নোয়াখালী ও ফেনীতে ভোটচুরির বিরুদ্ধে, এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। আমি অন্যায়ের কাছে মাথানত করব না। আমি গরিবের পক্ষে আছি, ইনশা আল্লাহ থাকব।’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান জানিয়ে কাদের মির্জা বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান থাকবে, এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নিন। এদের যারা শেল্টার দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন, তাদের চিহ্নিত করুন। সে যত বড়ো নেতা হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’