বাংলাদেশ থেকে নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে কৌশল অবলম্বন করে প্রতারনার নতুন ফাঁদ ফেলে একটি চক্র শহর ও গ্রামগঞ্জের হাট-বাজারে দেদারসে বিক্রি করছে কৃত্রিম রং করা মুরগির বাচ্চা। বাহারি রঙের এই মুরগির বাচ্চা দেখেই পছন্দ করে ঝটপট যারা কিনেছেন তারা হচ্ছেন প্রতারিত। অন্যদিকে মুরগির স্বাস্থ্যগত হুমকির পাশাপাশি ব্যাপকহারে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। সরেজমিনে শহরের রেলওয়ে কারখানা গেটবাজার, ঢেলাপীড় হাট, সাহেবপাড়া রেলওয়ে হাসপাতাল মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পোল্ট্রি মুরগির বাচ্চা লাল, গোলাপী, হলুদ, সবুজসহ বিভিন্ন রং করে বিদেশি উন্নত জাতের বাচ্চা বলে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা হচ্ছে। পছন্দ হওয়ায় অনেকে বেশি দামেই কিনছেন বাচ্চাগুলো। সংশ্লিষ্টরা জানায়, ছোট-ছোট লাল নীল ও সবুজের বাহারি রঙের এই মুরগির বাচ্চা আসলে মুরগির নতুন কোনো জাত নয়। সাধারণ লেয়ার জাতেরই মুরগি। বিশেষ কায়দায় রং করা হয়েছে। দেখে আকর্ষণীয় মনে হওয়ায় কিনে নিচ্ছেন ক্রেতা। বিশেষ করে বাসায় শিশুদের জন্য কিনছেন তারা। সাধারণ লেয়ার জাতের সাদা মুরগির বাচ্চা বিভিন্ন রঙ করা হচ্ছে। এর রঙ সর্বোচ্চ এক মাস পর্যন্ত থাকে। সাধারণ মুরগির বাচ্চা প্রতিটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও রঙ করা মুরগির বাচ্চা ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় রঙ করা মুরগির বাচ্চা বিক্রি করছে। সাধারণ মানুষ আকৃষ্ট হয়ে বেশি দামে এই পোল্ট্রি মুরগির বাচ্চা কিনে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। সাহেবপাড়া রেলওয়ে হাসপাতাল মোড়ে রঙিন মুরগির বাচ্চা বিক্রেতা আজিজার রহমান জানান, তিনি প্রায় ৬ মাস হয় রঙিন মুরগির বাচ্চা বিক্রি করছেন। বাচ্চাগুলো চট্টগ্রাম থেকে কিনে এনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে থাকেন। বাহারি রঙের মুরগির বাচ্চাগুলো খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সৌখিন ব্যক্তি ও শিশুরা খুব পছন্দ করে। বিক্রি করতে বেগ পেতে হয় না। গড়ে প্রতিদিন ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ বাচ্চা বিক্রি করা যায়। শহরের মিস্ত্রিপাড়ার জিতু খাতুন বলেন, এ রকম মুরগির বাচ্চা আগে কখনো দেখিনি। সত্যি এই বাচ্চাগুলোকে অদ্ভুত লাগছে। বেশ নাদুস-নুদুস। পছন্দ হওয়ায় আমার ছোট ছেলের জন্য প্রতিটি ৭০ টাকা করে ছয়টি বাচ্চা কিনেছি। উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের আরিফুল ইসলাম প্রতিটি ৮০ টাকা দরে ৩টি বাচ্চা কিনেছেন। তিনি বলেন, বাচ্চাগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। বিক্রেতা বললেন, বিদেশি নতুন জাতের তাই ৩টি বাচ্চা ক্রয় করেছি। সৈয়দপুর সরকারী কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মতিউর রহমান জানান, বর্তমান বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক হারে। অথচ কোন রকম স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা ছাড়ায় বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে রঙ্গীন মুরগীর বাচ্চাগুলো। আবার রং করতে গিয়ে ক্যামিকাল ব্যবহার করা হলে মৃত্যু হতে পারে মুরগি বাচ্চাগুলোর। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: রাশেদুল হক জানান , যদি কেউ রং করে মুরগীর বাচ্চা বিক্রি করে থাকে তবে এটা প্রতারণার শামিল। দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৈয়দপুরে প্রতারনার ফাঁদ পেতে বিক্রি হচ্ছে রঙ্গিন মুরগী, বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার আশংকা
0
Share.