সমালোচকরাই আগে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন, এটাই সফলতা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

0

ঢাকা অফিস : স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা মহামারির ব্যবস্থাপনা ও ভ্যাকসিনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যারা সমালোচনায় ব্যস্ত ছিলেন তারাই ভ্যাকসিন নিতে বেশি উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এমন অনেক সমালোচক রয়েছেন, যারা স্বাস্থ্যখাত নিয়ে এমনকি ভ্যাকসিনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও গণমাধ্যমে সমালোচনায় মুখর থাকতেন। তারাই সবার আগে ভ্যাকসিন নিয়েছেন, সেজন্য আমরা গর্বিত। এটি সরকারের জনস্বাস্থ্যনীতির একটি বড় সাফল্য।’রোববার ( ১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জে কুমুদিনি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের অর্থায়নে ‘কুমুদিনি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যান্সার রিসার্চ-এর ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে এই কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে এই ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে দেশের করোনা ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি জানান, ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলা করে, মহামারির এই সময়ে সরকার জনস্বাস্থ্য খাতে যেভাবে কাজ করেছে, তা সর্বস্তরে প্রশংসিত হয়েছে। আমরা স্বল্পসময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে সেটি মানবদেহে প্রয়োগ ও মানুষের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি।’স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণ ও ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা এত সহজ ছিল না। কোভিডের শুরুতে দেশে মাত্র একটি পিসিআর ল্যাব ছিল করোনা সনাক্তে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে ২২০ টি করোনা টেস্টের ল্যাব স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। করোনা চিকিৎসার জন্য প্রায় ২০ হাজার বেড প্রস্তুত করা হয়েছিল। মাত্র ৩০ টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ছিল। এখন পর্যায়ক্রমে ৯০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের লাইন লাগানো হয়েছে।’ করোনা মোকাবিলায় সরকারকে অনেক সংকটময় পরিস্থিতি পাড়ি দিতে হয়েছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘সারাবিশ্বে লকডাউনের কারণে ভেন্টিলেটর ও পিপিই’র পর্যাপ্ত সংস্থান ছিল না। কিন্তু সেসবেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল জরুরি ভিত্তিতে। দেশে টেস্টিং কিট ছিল না। সেই কিটও জরুরি ভিত্তিতে নিয়ে এসে মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন মানুষের ভ্যাকসিন ভীতি দূর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সব জায়গায়। বর্তমানে দেশে সংক্রমণের হার ২ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে থাকে, যখন কোনো দেশে এই হার তিন শতাংশের নিচে নেমে আসে, তখন সেই দেশ থেকে করোনা ধীরে ধীরে বিদায় হতে থাকে। দেশে মৃত্যুর হার এখন ১ দশমিক ৫। যা বিশ্বে এখন সর্বনিম্ন। বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮ হাজারের কিছু বেশি। যেখানে বিশ্বে কোনো কোনো দেশে মৃতের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে।’ মহামারি দূর করতে সরকারের বিভিন্ন জনমুখী পদক্ষেপ তুলে ধরে জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে এখন মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। শিল্প-বাণিজ্যসহ আমদানি-রফতানি প্রক্রিয়াও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সকলের চেষ্টায় এই মহামারি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কুমুদিনি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের মূল শিকড় নারায়ণগঞ্জে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে নতুন করে ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণের ফলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে বেসরকারি অংশগ্রহণের অনন্য নজির স্থাপিত হলো।’ তিনি জানান, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর দেশে প্রায় এক লাখ লোক মারা যায়। এবং বছরে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়। অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা আমাদের দেশে এখনো সেভাবে নেই। এ ক্ষেত্রে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে আমাদের। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আট বিভাগে আটটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের কাজ চলছে। যেখানে ক্যান্সার, কিডনি ও কার্ডিয়াক চিকিৎসার ব্যবস্থা সন্নিবেশ করা হবে। এগুলোর ফলে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি নতুন শয্যা যোগ হবে।’

Share.