মুশতাকের মৃত্যু ষড়যন্ত্রের অংশ কি না খতিয়ে দেখা উচিত: হানিফ

0

ঢাকা: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা সরকারকে বিব্রত করতে কি না তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুব উল আলম হানিফ।তিনি বলেন, প্রশাসনের মধ্যে অনেক সরকারবিরোধী ঘাপটি মেরে থাকেন। সুযোগ পেলেই তারা সরকারকে বিব্রত করেন। বিপদে ফেলতে চান। মুশতাক আহমেদের সেই ঘটনা, সেই ধরনের ষড়যন্ত্রের অংশ কি না এটা খতিয়ে দেখা উচিত। কারণ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এমন ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। এটাকে সরকার কখনই সমর্থন করে না।শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরামের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ও প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুব উল আলম হানিফ এসব কথা বলেন।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কোন ধারায় কতটুকু কী আছে, তা আইনজীবী ও সাংবাদিকরা ভালো বলতে পারবেন। প্রতিটি আইনের মধ্যেই দুর্বলতা থাকতে পারে। প্রতিটি আইনের দুটি দিক আছে। আইন যারা প্রয়োগ করে, তাদের আরো সচেতন হওয়া উচিত। পরশু দেখলাম মুক্ত চিন্তার মানুষ এবং লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যু হয়েছে। এটা অত্যান্ত দুঃখজনক, বেদনাদায়ক। কারাগারে একজন ব্যক্তির মৃত্যু কখনও কাম্য নয়। সে হতে পারে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। কিন্তু সে যখন কারাগারে থাকবে তার স্বাস্থ্য বা সবকিছুর দেখভালের দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষের।

কার গাফলতিতে মুশতাক আহমেদ কারাগারে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করল। আমি অনুরোধ করব- বিভাগীয় তদন্ত করে, কারও গাফলতির কারণে এই মৃত্যু হয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, গণমাধ্যমে দেখলাম মুশতাকের বিরুদ্ধে মামলা হবার পর ছয় বার জামিন আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত তাকে জামিন দেননি। এক বছর ধরে তিনি কারাগারে ছিলেন। আদালত সর্বোচ্চ জায়গা। তাদের উপরে আমাদের কোনো কথা নেই। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা আছে। কিন্তু আমার অনুরোধ থাকবে- এই যে মুশতাকের মতো একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র একটি লেখার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হবার পর ছয়বারেও জামিন দেয়া হলো না। এই জামিন না পাওয়াটা কতটা যৌক্তিক, বিচারপতিদের এটা ভাবনার বিষয়। ভবিষ্যতে যাতে কোনো মানুষ, এই ভাবে যেন আর কোনো ঘটনায় পতিত হয়ে সরকারকে বিব্রত না করে।আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে জাতিসংঘ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যেটার জন্য আমরা দীর্ঘদিন লড়াই করেছি। এটা জাতির জন্য গর্বের। একসময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো। মিসকিন বা গরিবের রাষ্ট্রও বলা হতো। আজকে সেই বাংলাদেশ আত্মমর্যাদা নিয়ে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত। এসব সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষতার জন্য। চলার পথে ছোটখাটো ভুল থাকতে পারে। কিন্তু সব মিলিয়ে আমাদের সফলতা সঠিকভাবে তুলে ধরাটাও সাংবাদিকদের নৈতিক দায়িত্ব। যারা দেশকে ভালোবাসেন, যারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি চান তারা সরকারের সফলতা জাতির সামনে তুলে ধরবেন।তিনি বলেন, করোনার দুর্যোগে প্রায় এক বছর ধরে সারা বিশ্ব বিপর্যস্ত। ধনী, শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো করোনা মোকাবেলায় হিমশিম খেয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ এখনো পরিপূর্ণভাবে সফল হয়নি। করোনায় প্রতিদিন তাদের দেশে লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।সেই তুলনায় আমরা বাংলাদেশ সীমিত সম্পদ ও সক্ষমতা নিয়ে সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। যে মন্ত্রণালয়কে মিডিয়ায় ব্যর্থ হিসেবে চিহিৃতও করা হয়েছিল।ভ্যাকসিন ইস্যুতে হানিফ বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ ভ্যাকসিন পাচ্ছে না। জুন-জুলাইয়ে পেতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতায় এই ভ্যাকসিন দেশের মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে গেছে। প্রায় পাঁচশ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থেকে একযোগে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। লাখ লাখ মানুষ এরই মধ্যে ভ্যাকসিন পেয়েছে। আরও ভ্যাকসিন আসছে। মার্চের মধ্যে তিন কোটি মানুষের ভ্যাকসিন দেয়ার সক্ষমতা আমাদের হাতে থাকবে এবং তা দিতে সক্ষম হবো।

Share.