বাংলাদেশ থেকে খুলনা জেলা প্রতিনিধি: পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে ১১শ’ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। যা বিগত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ভালো ফলনের জন্য তরমুজ ক্ষেত নিয়মিত পরিদর্শন ও চাষীদের পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হবে এবং উৎপাদিত তরমুজ করোনাকালীন গ্রামীন অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন কৃষিবীদরা। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, তরমুজ পুষ্টিগুণে ভরা একটি ফল। এর প্রায় ৯৬ শতাংশ পানি। তরমুজ প্রচন্ড গরমে পানির চাহিদা পূরণ ও শরীর ঠান্ডা রাখে, উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, হৃদপিন্ড ভালো রাখে। পুষ্টিবিদদের মতে, তরমুজের বহু ঔষধীগুণ রয়েছে। তরমুজ মানব দেহের হৃদরোগ, হাপানী, মস্তিকের রক্তক্ষরণ ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমায়, চামরার রোগ প্রতিরোধ ও মসৃন করে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। সুষ্ঠু রক্ত সঞ্চালন, মুখের ঘা, সর্দি, ঠান্ডা জ্বর প্রতিরোধ করে, কিডনি ভালো রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হাড়ের জোড়া মজবুতসহ চোখের সমস্যা দূর করে। ঔষধী গুণের পাশাপাশি তরমুজ একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় উপজেলার দুটি ইউনিয়নে দীর্ঘদিন তরমুজ হয়ে আসছে। গত বছর উপজেলায় ৫১০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী এবছর ১১শ’ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে দেলুটি ইউনিয়নে এক হাজার হেক্টর ও গড়ইখালী ইউনিয়নে ১শ’ হেক্টর। মোট আবাদের অর্ধেক জমিতে হাইব্রিড জাতের ড্রাগন ও অর্ধেক জমিতে সুইট ড্রাগন ও পাকিজা জাতের তরমুজের চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে নিবিড় পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে তরমুজ চাষীরা। নিয়মিত তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন ও চাষীদের পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা। দুই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ তরমুজ চাষীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং সার্বিক তদারকি করছেন। বর্তমানে ক্ষেতের প্রায় প্রতিটি গাছে ফল ধরা শুরু করেছে। দেলুটির সৈয়দখালী গ্রামের চাষী লোটন সরদার জানান, এ বছর আমি ১০ বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করেছি। বর্তমানে ফসলের অবস্থা খুবই ভালো। এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, তরমুজ একটি লাভজনক ফসল। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে চাষ শুরু করা হয় এবং এপ্রিলের শেষের দিকে বাজারজাত করা যায়। তরমুজ চাষে এক বিঘা জমিতে ১০/১২ হাজার টাকা খরচ হয়। খুব বেশি পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। সার-পানি দিলেই হয়। এক বিঘা জমির উৎপাদিত তরমুজ ৫০-৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে অত্র এলাকার তরমুজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত তরমুজ ঢাকা, নরসিংদী, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়। করোনা কালীন গ্রামীন অর্থনীতিতে এলাকার উৎপাদিত তরমুজ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
পাইকগাছায় তরমুজের ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে চাষীরা;বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
0
Share.