স্পোর্টস ডেস্ক: আজ ২৬ মার্চ, বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে নিউজিল্যান্ডে লজ্জায় ডুবল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ৩১৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে হলে দায়িত্ব নিতে হতো টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের। সেখানে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে দুঃস্বপ্নের মতো। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নূন্যতম লড়াই পর্যন্ত করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানেরা। ফলে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতেও বড় ব্যবধানে হেরে গেল তামিম ইকবালের দল।আজ শুক্রবার ওয়েলিংটনে শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ১৬৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারাল নিউজিল্যান্ড। টানা তিন হারে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ।বেসিন রিজার্ভে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে চরম হতাশার। ব্যাট করতে নেমে ম্যাট হেনরির বলে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে তুলে দিয়ে ফেরেন তামিম। লেংথে পড়া বলটি তামিমের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটকিপার টম ল্যাথামের গ্লাভসে। ৯ বলে ১ রান করেন তামিম।
এরপর সৌম্যকেও তুলে নেন হেনরি। ডিপ ফাইন লেগে ফিল্ডার রেখে বল করেন তিনি। সেই ফাঁদে পা দেন সৌম্য। পুল করতে গিয়ে বোল্টের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। তিনিও ফিরলেন ১ রানে।ভালো শুরু করা লিটনও পারেননি থিতু হতে। সপ্তম ওভারে হেনরিকেই পুল করতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ফেরার আগে ২১ রান করেন লিটন।এরপর জুটি বাঁধেন মুশফিক ও মিঠুন। তবে ওয়ানডে ক্রিকেট খেলতে নেমে রীতিমতো টেস্ট খেললেন দুজন। পঞ্চম উইকেটে ৬৯ বলে ২২ রান যোগ করার পর ভাঙে এই জুটি। ১৮তম ওভারের শেষ বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিঠুন। থিতু হওয়ার পরিকল্পনায় নেমে ৩৯ বলে ৬ রান করেন তিনি। অথচ আগের ম্যাচেই তিনি খেলেছেন ৭৩ রানের ইনিংস। এরপর বাকি সময় লড়াই করেছেন মাহমুদউল্লাহ। টেলএন্ডারদের নিয়ে যতক্ষণ সম্ভব হারের ব্যবধান কমিয়েছেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত ৪২.৪ ওভারে ১৫৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৭৬ রানে অপরাজিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত লড়াই করা মাহমুদউল্লাহ। এর আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩১৮ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। বোলিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। টস জিতে ব্যাট করতে নামা স্বাগতিক দুই ওপেনারকে টিকতে দেননি বাংলাদেশের বোলারেরা। তবে শুরুর দিকে হেনরি নিকোলসকে আউট করার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মিড অফে ক্যাচ মিস করেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর পর ষষ্ঠ ওভারে মেহেদী মিরাজ বল স্টাম্পে ছোড়েন। কিন্তু তাঁর থ্রো স্লো থাকায় আগেই পৌঁছে যান নিকোলস।অষ্টম ওভারেও জীবন পান নিকোলস। তাসকিনের বলে ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিম। উল্টো বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। আগের ম্যাচেও ঠিক এইরকম ক্যাচই মিস করেছিলেন মুশফিক।এরপর অবশ্য আক্ষেপ বাড়তে দেননি তাসকিন। অষ্টম ওভারেই নিকোলসকে ফিরিয়ে দেন তিনি। তাসকিনের ফুল লেংথ বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে গালিতে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ২১ বলে ১৮ রান করে ফেরেন তিনি। ৪৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।পরের ওভারেই বড় উইকেট পান রুবেল। আগ্রাসী হওয়ার আগেই গাপটিলকে ফেরান তিনি। রুবেলের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে মিডঅনে ক্যাচ দেন তিনি। ওই ক্যাচটি ধরেন লিটন। ২৮ বলে ২৬ রান করে ফেরেন তিনি।দলে ফেরা রস টেইলরকেও টিকতে দেননি রুবেল। রুবেলের অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে খেলতে গিয়ে তিনিও ক্যাচ তুলে দেন মিড অফে। কিন্তু ওই ক্যাচ হাতছাড়া করেন মুস্তাফিজ। এরপর পরের বলেই বাউন্ডারি মারতে গিয়ে আউট হন টেইলর। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান টম ল্যাথামকে ফিরিয়ে দেন সৌম্য সরকার।দ্রুত চার উইকেট ফিরিয়ে বাংলাদেশের যখন আরও চাপ বাড়ানোর কথা। তখনই সব এলোমেলো করেন দেন ডেভন কনওয়ে। ড্যারেল মিচেলকে নিয়ে দলকে টানলেন তিনি। এর মধ্যে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন কনওয়ে। বাংলাদেশি পেসার তাসকিনের আহমেদের করা বল পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে শতক স্পর্শ করেন কনওয়ে। শেষ পর্যন্ত ১২৬ রানে থামেন।কনওয়ের পর সেঞ্চুরির দেখা পান মিচেলও। ইনিংসে শেষ বলে দুই রান নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত শতক স্পর্শ করেন ড্যারেল মিচেল। জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ৩১৯ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৯২ বলে ১০০ রানে অপরাজিত ছিলেন মিচেল।