যে কারণে ফেসবুক লাইভের ভিডিও সরালেন মামুনুল হক

0

ঢাকা অফিস: গেলো কয়েকদিন ধরে আলোচনা-সমালোচনা যেনো পিছুই ছাড়ছে না হেফাজত নেতা মামুনুল হকের। নারায়ণগঞ্জের রিসোর্টকাণ্ডের পর বেশ কয়েকবার এসেছেন ফেসবুক লাইভে। কখনো কথা বলেছেন আত্মপক্ষ সমর্থন করে আবার কখনো কথা বলেছেন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে।তবে গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) লাইভে এসে কথা বলেছেন তার বিয়ের বিষয়ে। এই লাইভ নিয়েও তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক। যার ফলশ্রুতিতে সেই লাইভ ভিডিও তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে সরিয়ে নিতে তিনি বাধ্য হয়েছেন। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে ওই পেজে ঢুকে কোনও ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়নি।এর আগে লাইভে তিনি বলেন, আমি আপনাদের সবার কাছে দোয়া চাই, আমার ব্যক্তিগত অসাবধানতার কারণে যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে, যথাযথভাবে আমি পদক্ষেপ নিতে না পারার কারণে ব্যক্তিগতভাবে আমি যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি, সেজন্য আমি নিজে মর্মাহত। আমার কারণে আরও অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের কাছে আমি হাতজোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।মামুনুল হক বলেন, আমি একাধিক বিয়ে করেছি। ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী একাধিক বিয়ের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। একজন পুরুষকে চারটি বিয়ে করার অনুমতি দিয়েছে ইসলামি শরিয়াহ। সুতরাং একাধিক বিয়ে করা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। এটা নিয়ে কারও কথা বলার অধিকার নেই।তিনি বলেন, আমার স্ত্রী কি বাংলাদেশের প্রশাসনের কাছে বা থানায় কিংবা আদালতে- কোথাও কি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন? তাহলে কেন আমার ব্যক্তিগত বিষয়ে এত কথা বলা হচ্ছে, এত মাতামাতি হচ্ছে।দেশবাসীর উদ্দেশে মামুনুল হক বলেন, এই যে একটি অবস্থা তৈরি করা হয়েছে, আশু যদি এ অবস্থার পরিবর্তন না ঘটে, তাহলে বাংলাদেশ অনিবার্যভাবেই একটি সংঘাতমূলক পরিস্থিতির দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে। কাজেই আমি সংশ্লিষ্ট মহলকে বলব, আগুন নিয়ে বেশি খেলা করবেন না। এই আগুন নিয়ে খেলার পরিণাম কারও জন্য শুভ পরিণতি ডেকে আনবে বলে মনে হয় না।মামুনুল হক বলেন, প্রশ্ন করতে পারেন- আপনার বিরুদ্ধে কেন এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হলো। রাষ্ট্রযন্ত্র আদালত ও প্রশাসন এই যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, এর মূল লক্ষ্য আমি মামুনুল হক নই। এটি ইসলামের পক্ষের কণ্ঠ রুদ্ধ করে দেওয়া।তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীলদের গোপন রেকর্ড ফাঁসের যে ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে, এর মাধ্যমে অশুভ উদ্দেশ্য স্পষ্ট। তারা চাচ্ছে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বকে কলুষিত করতে। অন্তর্দ্বন্দ্ব ও কলহ তৈরি করতে। আস্থা ও দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, হেফাজতে ইসলামের সংহতি দৃঢ়ভাবে অটুট থাকবে। পারস্পরিক এ ভেদাভেদ আমরা ভুলে যাব। কেউ কোনো দোষ করে থাকলে সাংগাঠনিকভাবে তার সংশোধনের যথাযথ ব্যবস্থা করা হবে। হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতৃত্ব রয়েছে, তারা যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। যারা হেফাজতে ইসলামকে দুর্বল করার পাঁয়তারা করছেন এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না।মামুনুল হক বলেন, আমার সেই নৈতিক শক্তি রয়েছে, যার কারণে আমি উপস্থিত। চড়াও হতে আসা আমার প্রাণ কেড়ে নেওয়ার মতো। হত্যা করার মতো ঔদ্ধত্য নিয়ে যে সন্ত্রাসী বাহিনী সেদিন রয়্যাল রিসোর্টে হামলা চালিয়েছিল, সেখানেও পিছপা হইনি, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম। ব্যক্তিগতভাবে একা হওয়ায় অনেক সন্ত্রাসীকে মোকাবিলা করতে পারিনি। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, হুমকি-ধমকির মাধ্যমে আমার নৈতিক অবস্থাকে দুর্বল করা যাবে না।এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন এই হেফাজত নেতা। পাশাপাশি বিশ্বের মুসলমান ভাইদেরও তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।মামুনুল বলেন, ইতোমধ্যে তাদের ব্যাপারে আমি এজাহার দায়ের করেছি। আরও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Share.