ঢাকা অফিস: করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সারাদেশে কঠোর লকডাউনে মানুষের আয় কমেছে। এতে নিত্যপণ্য কেনাকাটায় সরকারি বিপণন প্রতিষ্ঠান টিসিবির ট্রাকের সামনে দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়েছে। তবে টিসিবির পণ্য সীমিত হওয়ায় অনেকেই দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন।কামরাঙ্গীরচরের পঞ্চাশোর্ধ্ব বৃদ্ধ মোখলেস মিয়া গতকাল (মঙ্গলবার) দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও টিসিবির পণ্য না পেয়ে খালি হাতে বাড়িতে ফিরে যান। আজকেও দীর্ঘ লাইন দেখে হতাশায় পড়েছেন। এখানে শুধু মোখলেস মিয়া নয় অনেকেই টিসিবির ট্রাকের সামনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে পণ্য না পেয়ে খালি হাতেই বাড়িতে ফেরেন।বুধবার (০৭ জুলাই) কামরাঙ্গীরচর, নিউমার্কেট, মুগদা মেডিকেলের পাশে ও শনিরআখড়া টিসিবির ট্রাকে পণ্য বিক্রি করছে। এসময় পণ্য কিনতে আসা মোখলেস বলেন, যে লম্বা লাইন! আজও পণ্য পাই কিনা খোদাই জানে। এ কথা বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় টিসিবির ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি এসব কথা বলেন।সরেজমিনে টিসিবির পণ্য বিক্রেতা ও আগত ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, করোনাকালে মানুষের চাহিদার তুলনায় টিসিবির পণ্য কম সরবরাহ করা হচ্ছে। তাছাড়া টিসিবির পণ্যের ট্রাক দুপুরের আগে আসছে না। কিন্তু অসংখ্য নারী ও পুরুষ সকাল থেকেই লম্বা সিরিয়াল দিয়ে অপেক্ষা করেন। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজেও অপেক্ষার প্রহর যেন তাদের ফুরায় না।নিউমার্কেটে টিসিবির পণ্য বিক্রেতা জানান, তাদের প্রতিদিন মাত্র ২০০ জনের পণ্য দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু কমপক্ষে তিনগুণ অর্থাৎ ৬০০ জনের চাহিদা রয়েছে। ফলে যারা সিরিয়ালে আগে থাকেন তাদেরকেই তারা পণ্য দিয়ে থাকেন।এসব ট্রাক থেকে ক্রেতারা চিনি কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা (একজন সর্বোচ্চ চার কেজি ), প্রতিকেজি মসুর ডাল ৫৫ টাকা (সর্বোচ্চ দুই কেজি ) এবং সয়াবিন তেল ১০০ টাকা লিটারে (দুই থেকে সর্বোচ্চ ৫লিটার) কিনতে পারছেন।সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, টিসিবির ট্রাকের দুই পাশে নারী ও পুরুষের দীর্ঘ লাইনে স্বাস্থ্যবিধি মোটেই মানা হচ্ছে না। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, টিসিবির পণ্য কিনতে এসে কাছাকাছি দাঁড়িয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সকাল থেকে পণ্য বিক্রি শুরু হলে এতটা ভিড় ও ভোগান্তি হতো না বলে তারা জানান।করোনাভাইরাস মহামারি ও সারা দেশে চলমান লকডাউনে ভোক্তাদের অপেক্ষাকৃত কম দামে পণ্য দিতে ৫ জুলাই থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়। আগামী ২৯ জুলাই (ঈদুল আজহার ছুটি ব্যতিত) পর্যন্ত পণ্য বিক্রি প্রতিদিন চলবে।টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, মহানগরসহ সারা দেশে টিসিবির ৪৫০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৮০টি ও চট্টগ্রাম সিটিতে ২০টি ট্রাক রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি মহানগর ও জেলা শহরেও ট্রাকসেলের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।বর্তমানে টিসিবির প্রতিটি ট্রাকে দৈনিক ৬০০-৮০০ কেজি চিনি, ৩০০-৬০০ কেজি মসুর ডাল এবং ৮০০-১২০০ লিটার সয়াবিন তেল বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
টিসিবির পণ্য: দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে খালি হাতে ফিরছেন মানুষ
0
Share.