ডেস্ক রিপোর্ট: রাশিয়ার ফার ইস্ট অঞ্চলের কামচাটকা উপদ্বীপে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের নিহত ২৮ জনের মধ্যে ১৯ আরোহীর মরদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন উদ্ধারকারী দলের কর্মীরা।মঙ্গলবার কামচাটকার উপকূলীয় শহর পালানার কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিল এএন২৬ নামের যাত্রীবাহী বিমানটি।বিমানটিতে ২৮ জন আরোহী ছিলেন যাদের মধ্যে ১৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।তবে বাকি সবাই নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয় বলে রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১৯টি মরদেহের নানা অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। ৫০ জনের বেশি উদ্ধারকর্মী সেখানে অভিযান চালান। তবে ঘন কুয়াশা ও বাতাসের জন্য বেশ কিছু সময় উদ্ধারকাজ বন্ধ ছিল।উদ্ধারকারী দলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার যাত্রীবাহী এন-২৬ বিমানটি কামচাটকার প্রধান শহর পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাটস্কি থেকে উপকূলীয় শহর পালানাতে যাচ্ছিল। সেদিন ২টা ৪০ মিনিটে রওনা হওয়ার পর পালানা বিমানবন্দর থেকে নয় কিলোমিটার দূরে থাকতে বিমানটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণকক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পালানার কাছাকাছি আসার পর একটি পর্বতের চুড়ার সঙ্গে সংঘর্ষে সেটি ধ্বংস হয়। পরে সকাল ৯টা ৬ মিনিটে বিমানটির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মেলে। বিমানটি খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার সময় ওই এলাকা মেঘাচ্ছন্ন ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোও।রাশিয়ার বিস্তৃত উপদ্বীপ কামচাটকা দেশটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকাসমূহের মধ্যে একটি। বিশাল বনাঞ্চল, জীবন্ত আগ্নেয়গিরি ও কালো বালির সমুদ্র সৈকতের টানে প্রতি বছরই রাশিয়া ও বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে এই উপদ্বীপটিতে জড়ো হন পর্যটকরা।মঙ্গলবার বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির যাত্রীরাও পর্যটনের উদ্দেশেই কামচাটকা যাচ্ছিলেন।বিমানটি ধ্বংসের তিনটি সম্ভাব্য কারণ নির্দিষ্ট করেছেন তদন্তকারী দলের সদস্যরা। তারা বলেছেন- দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা পাইলটের অদক্ষতা- এই তিনটির যে কোনো এক বা একাধিক কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।তবে কামচাটকার বেসামরিক বিমান পরিবহন সংক্রান্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটির ফিটনেস সনদ ইতিবাচক ছিল।এদিকে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন কামচাতকার গভর্নর ভ্লাদিমির সোলোদভ। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ৪৭ হাজার মার্কিন ডলার করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া তাঁদের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেছেন গভর্নর। এ ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও।এন-২৬ মডেলের বিমানগুলো বেশ পুরোনো। সেগুলো ১৯৬৯ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন যুগে তৈরি করা হয়েছিল। সাধারণত পরিবহনের কাজে ব্যবহার হওয়া এ বিমানগুলো আগেও বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।২০১২ সালে একই মডেলের অপর একটি বিমান কামচাটকার একটি জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়ে ১০ জন নিহত হন।
রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ১৯ মরদেহ উদ্ধার
0
Share.