ঢাকা অফিস: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আগুনে পোড়া কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে একে একে ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে অগ্নিকাণ্ডটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২ জনে দাঁড়াল। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান জানিয়েছেন, কারখানাটি থেকে লাশগুলো বের করা হচ্ছে। এখনও চূড়ান্তভাবে বলা যাচ্ছে না, ঠিক কতজন মারা গেছেন।শুক্রবার ( ৯ জুলাই) দুপুরে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন। তিনি বলেন, পাঁচ অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা ৪৯ জনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠিয়েছি।ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ছয়তলা ভবনের চতুর্থ তলা পর্যন্ত প্রবেশ করা গেছে। সেখান থেকেই এতোগুলো মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছয়তলা কারখানা ভবনের উপরের দুই ফ্লোরে এখনো আগুন জ্বলছে। আগুন নেভানোর কাজ চলছে এখনো। ধ্বংসস্তূপে তল্লাশিও এখনো শেষ হয়নি।এর আগে সকালে আগুনে অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানিয়েছেন, নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসা বাবদ আপাতত ১০ হাজার টাকার আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার নিচ তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার পর কারখানার ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে তখনই তিনজনের মৃত্যু হয়।এদিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভবনে আটকাপড়ে নিখোঁজ হওয়া শ্রমিকদের উদ্ধারে দেরি হওয়ায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। শুক্রবার বেলা ১১টার থেকে থেকে সাড়ে ১১টায় পর্যন্ত প্রায় আধা ঘণ্টা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের ওপর এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ ধাওয়া-পাল্টার ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।সংঘর্ষ চলাকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে তিনটি শর্টগান লুট করে। পরে দুটি উদ্ধার হলেও একটি এখনও উদ্ধার হয়নি।রূপগঞ্জের সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যরা হলেন- রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান, জেলার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন, পুলিশের একজন প্রতিনিধি এবং কলকারখানা অধিদপ্তরের জেলার একজন কর্মকর্তা।
রূপগঞ্জের সেই কারখানায় লাশের স্তূপ
0
Share.