পেনাল্টি মিসে ক্ষমা চাইলেন রাশফোর্ড

0

স্পোর্টস ডেস্ক: ইউরোর ফাইনালের পর ইংরেজ সমর্থকদের বর্ণবাদী আচরণ নিয়ে উত্তাল পুরো ফুটবল বিশ্ব। যদিও কিছুসংখ্যক দুষ্কৃতকারী ছাড়া ইংল্যান্ডের সাধারণ সমর্থক, প্রশাসন এবং ফুটবলারদের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছেন তিন ইংলিশ ফুটবলার।এমনকি তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিশ্বের দ্রুততম মানব উসাইন বোল্টও। পুরো ঘটনাকে মানব-সভ্যতার জন্য ভয়ংকর এবং অনৈতিক বলে মন্তব্য করেছেন বোল্ট।ইউরোর ফাইনালটা শেষ হয়েছে তাও কেটে গেছে তিন দিন। সেখানে ৫৫ বছর পর ফাইনালে পৌঁছেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে থ্রি লায়নদের। তবে সেটা নিয়ে যতটা না আলোচনা হচ্ছে, তার চেয়েও বেশি সমালোচনার ঝড় উঠেছে ইংরেজ সমর্থকদের আচরণ নিয়ে।ফাইনালে তিন ইংলিশ কৃষ্ণাঙ্গ ফুটবলার, রাশফোর্ড, সাঞ্চো এবং সাকা’ পেনাল্টি মিসের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের গায়ের রং নিয়ে কটূক্তি করেছেন ইংল্যান্ড সমর্থকরা। ম্যাচ হেরে যাওয়ার পেছনে তাদের দেশাত্মবোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। এখন এ বর্ণবৈষম্য মূলক আচরণে দুনিয়াজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া সবাই এসে পাশে দাঁড়িয়েছেন ফুটবলারদের। গায়ের রংকে পুঁজি করে যারা মন্তব্য করে, তাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন তারা।দুই দিন পার হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন রাশফোর্ড নিজেও। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে বিশাল এক বার্তা দিয়েছেন এ ইংলিশ ফুটবলার। যেখানে, পেনাল্টি মিসের সময় খুব একতা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না বলে মেনে নিয়েছেন মার্কাস, এমনকি কিকটাও যে ভালো হয়নি তাও স্বীকার করেছেন তিনি। কিন্তু বর্ণবাদী আচরণ নিয়ে কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, পারফরম্যান্স নিয়ে শত সমালোচনা সহ্য করলেও গায়ের রং নিয়ে কোনো কথা মেনে নেবেন না। নিজের রং এবং জন্মপরিচয় নিয়ে তিনি গর্ব করেন বলেও জানিয়েছেন রাশফোর্ড।এ বক্তব্যের পর তার সমর্থনে রাস্তায় নেমে এসেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং ইংলিশ ফুটবলের সমর্থকরা। ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্ল্যাকার্ডে ছেয়ে যায় ব্রিটেনের সড়ক। তারা মানুষের জন্য সুন্দর একটা পৃথিবীর কামনা করেন, যেখানে থাকবে না কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ। এক সমর্থক বলেন, এ ঘটনায় আমি কেঁদেছি। আমার ছোট ছেলেটা আমাকে বারবার জিজ্ঞেস করছে, কী হচ্ছে ? আমি তাকে কী উত্তর দেব। আমি আগামী প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর পৃথিবী চাই। যেখানে কেউ এমন উদ্ভট আচরণ করবে না।আরেক সমর্থক বলেন, এটা খুবই বাজে এবং জঘন্য ঘটনা। একজন অ্যাথলিটকে তার পারফরম্যান্স দিয়ে বিচার করা উচিত। তার রং, ধর্ম কখনোই আলোচ্য বিষয় হতে পারে না। ইংল্যান্ডের মানুষ রাশফোর্ডের পাশে আছে।সাধারণ মানুষ, ফুটবলার ও ব্রিটেন সরকারের পর এবার দুনিয়ার দ্রুততম মানব উসাইন বোল্টকেও পাশে পেলেন ফুটবলাররা। নিজে কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় এ দুঃখটা তিনি ভালোই বোঝেন বলে জানিয়েছেন বোল্ট। তবে মানবসভ্যতার জন্য এসব ঘটনা খুবই লজ্জার এবং ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।জ্যামাইকা স্প্রিন্টার উসাইন বোল্ট বলেন, এটা ফুটবল। এখানে আপনি কখনো জিতবেন, কখনো হারবেন- এটাই স্বাভাবিক। পরাজয় সবসময় কষ্ট দেয়, আমিও জীবনে বহুবার এ অনুভূতি পার করেছি। পারফরম্যান্স নিয়ে আপনি সমালোচনা করতেই পারেন। কিন্তু এই আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেয় যায় না। সমাজের জন্য এ মানুষ ভয়ংকর। মানুষের কাজের মধ্যে যদি তার রং আর ধর্মকে নিয়ে আসেন, তাহলে আপনি কখনোই এগিয়ে যেতে পারবেন না।এদিকে ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু করেছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

Share.