ডেস্ক রিপোর্ট: পরিবেশ দূষণ আর বন ধ্বংসের কারণে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে পরিচিত বন আমাজন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বনের প্রাকৃতিক স্বভাবেই চলে এসেছে পরিবর্তন। সবুজ ঘেরা এই বনপৃথিবী থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজের সরবরাহ করলেও এখন করছে তার উল্টোটা। যে পরিমাণ কার্বন এ বন শোষণ করছে, তার চেয়ে বেশি কার্বন বাতাসে ছেড়ে দিচ্ছে এই রেইন ফরেস্ট।বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ বনের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কারণ নির্বিচারে এখানকার গাছ কাটা হচ্ছে। পাশাপাশি দাবানল জ্বালিয়ে দিচ্ছে একরের পর একর বনভূমি। পৃথিবীর অন্যান্য স্থানের তুলনায় গ্রীষ্ম মৌসুমে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩ গুণ বেশি বাড়ছে। পরিবেশ দূষণে সহযোগী গ্রিনহাউজ গ্যাস তৈরিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।পৃথিবীর যে এলাকাগুলো বায়ুমণ্ডল থেকে বেশি কার্বন শোষণ করত, সব স্থানই এখন হুমকির মুখে। যে বনাঞ্চল কার্বন শোষণ করত, সেই বনাঞ্চল পুড়িয়ে ছাই করে তৈরি হওয়া জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে মারাত্মকভাবে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে কার্বনসহ ওজন স্তরের জন্য ক্ষতিকর সব গ্যাস।বিশ্বের বৃহত্তম রেইনফরেস্ট আমাজন কার্বন শোষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন আর বন ধ্বংসের কারণে আমাজন কার্বন শোষণের চেয়ে নিঃসরণ করছে বেশি।ব্রাজিল কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমাজন বন যে পরিমাণ কার্বন শোষণ করেছে, চলতি বছরই তার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি নিঃসরণ করেছে। তার মানে ২০১০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এ বনের কার্বন নিঃসরণ অনেক বেড়েছে। বিজ্ঞানীরা গবেষণার জন্য এই এলাকাতে বিমান উড়িয়েছে। ৬০০টি বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করেছে। বনের উত্তর আর দক্ষিণে কার্বন নিঃসরণের বেশ ভালো প্রমাণ পেয়েছেন তারা।আমাজনের পূর্বাঞ্চলে ৩০ শতাংশ বন ধ্বংস হয়েছে। এই অঞ্চল পশ্চিমাঞ্চল থেকে ১০ গুণ বেশি কার্বন নিঃসরণ করে। পশ্চিমের ১১ শতাংশ বন ধ্বংস হয়েছে। গবেষণার পর এমন তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্পেস রিসার্চ।গবেষণা বলছে, আমাজনের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল বন নিধন আর পরিবেশ দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই মাসের গরমের সময় এ অঞ্চলের তাপমাত্রা চলতি বছর ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। আর্কটিকেও ঠিক এই পরিমাণেই তাপমাত্রা বেড়েছে। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে এর চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে তাপমাত্রা। হুমকির মুখে পড়েছে পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে পরিচিত এই রেইনফরেস্ট।
ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে আমাজন!
0
Share.