ডেস্ক রিপোর্ট: আফগানিস্তানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ অভিযোগ করে বলেছেন, দুদেশের মধ্যকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রোসিংয়ে বিমান বাহিনীর মাধ্যমে তালেবান বিদ্রোহীদের সহায়তা করছে প্রতিবেশী পাকিস্তান।যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) আমরুল্লাহ বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরুতে কান্দাহার প্রদেশে পাকিস্তানের সঙ্গে স্পিন বোদাক সীমান্ত ক্রোসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আফগান তালেবান। এরপর থেকে বিদ্রোহীদের সহায়তা দিয়ে আসছে পাকিস্তানি বিমান বাহিনী।তিনি জানান, আফগান সামরিক বাহিনী ও বিমান বাহিনীকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করে দিয়েছে পাকিস্তানি বিমান বাহিনী। তারা বলেছে যে স্পিন বোদাক থেকে তালেবানকে বিতাড়িত করতে যে কোনো পদক্ষেপ পাকিস্তানি বিমান বাহিনী সহ্য করবে না।জবাবে শুক্রবার পাকিস্তানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণাণলয় জানিয়েছে, আমাদের আকাশসীমা সুরক্ষায় আমাদের বিমান বাহিনীর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পাকিস্তানের চামান সেক্টরের বিপরীত অঞ্চলে বিমান অভিযানের জন্য আফগান বাহিনী তাদের ইচ্ছার কথা জানিয়েছে পাকিস্তানকে। আফগান সরকারের নিজ ভূখণ্ডের মধ্যে অভিযান পরিচালনার অধিকার আছে। কাজেই পাকিস্তান ইতিবাচকভাবেই তাতে সাড়া দিয়েছে।কিন্তু আন্তর্জাতিক বিধি অনুসারে খুবই সীমান্তঘেঁষা অভিযানের কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয় না বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটি বলছে, কাজেই আমাদের জনগণ ও বাহিনীকে সুরক্ষা দিতে পাকিস্তান প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।এদিকে সীমান্ত ক্রোসিংয়ের পুনর্নিয়ন্ত্রণ নিতে তালেবানের সঙ্গে তীব্র সংঘাতে জড়িয়েছে আফগান বাহিনী। শুক্রবার (১৬ জুলাই) সরকারি বাহিনী অভিযানে নামলে সংঘাত শুরু হয়েছে।আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করেছে বিদ্রোহীরা। তারা এখন দেশটির এক কুখ্যাত যুদ্ধবাজ নেতার ঘাঁটিতে লড়াই শুরু করে দিয়েছে।রাতে ভয়াবহ যুদ্ধের পর সীমান্তের কাছে পাকিস্তানের একটি হাসপাতালে কয়েক ডজন আহত তালেবান যোদ্ধা চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে এই খবর দিয়েছেন ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিনিধি।সীমান্ত থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের চামানে নিজেকে তালেবান বিদ্রোহী বলে দাবি করা মোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান বলেন, আমাদের একজন নিহত ও কয়েক ডজন যোদ্ধা আহত হয়েছেন।এমন এক সময় এই সীমান্ত লড়াই শুরু হয়েছে, যখন দীর্ঘদিনের শত্রু আবদুল রশিদ দস্তামের ঘাঁটির কাছাকাছি পৌঁছেছে তালেবান। বিদ্রোহীদের মুখপাত্র বলেন, জাওয়াজয়ান প্রদেশের রাজধানী সেবারগান থেকে যুদ্ধবাজ এই নেতার মিলিশিয়া বাহিনী পালিয়ে গেছে।শহরের ফটক এখন তালেবানর দখলে। এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় তালেবান মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদিন বলেন, দোস্তামের মিলিশিয়ারা শহর ছেড়ে বিমানবন্দরের দিকে পালিয়েছে।জাওয়াজয়ানের ডেপুটি গভর্নর বলেন, প্রাদেশিক রাজধানীর ফটক পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তালেবান। কিন্তু সরকারি বাহিনী তাদের পাল্টা আঘাত করছে।বহু বছর ধরে উত্তরাঞ্চলে বিশাল মিলিশিয়া বাহিনীর কর্তৃত্ব বজায় রেখে আসছেন দোস্তাম। ১৯৯০-এর দশকে তালেবানের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড যুদ্ধের জন্য এই মিলিশিয়ারা পরিচিতি পেয়েছে। যুদ্ধে হাজার হাজার তালেবান বন্দিকে হত্যা করেছে তার বাহিনী।দেশজুড়ে তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দোস্তামের মিলিশিয়াদের প্রতিরোধ সরকারি বাহিনীর সহায়ক হবে বলে যে ধারণা করা হচ্ছিল, তাদের এভাবে শহর ছেড়ে পলায়নে সেই আশায় বালু পড়েছে। এভাবে যখন যুদ্ধ বেড়েই চলছে, তখন কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যেও কথার লড়াই শুরু হয়েছে।
তালেবানকে সহায়তা করছে পাকিস্তান: আফগানিস্তান
0
Share.