ঢাকা অফিস: প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবশেষে খুলে দিতে চায় সরকার। এর আগে কয়েক দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে সেই পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে আসে সরকার। তাই এবার আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আগাম কোনো ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে না।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী সেপ্টেম্বরেই খুলে দেওয়া হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ লক্ষ্যে শিক্ষাসংশ্নিষ্ট দুই মন্ত্রণালয়ে নানা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিষয়টি মাথায় রেখেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্কুলগামী শিশুদের আপাতত না হলেও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার কাজও চলছে জোরেশোরে। চার লাখ ৪০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের টিকা দেওয়ার কাজটি আগামী বুধবারের (১১ আগস্ট) মধ্যে শেষ করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে খুলে দেওয়া হবে না। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হবে এবং আটকে থাকা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো আগে নেওয়া হবে। এরপর ধাপে ধাপে কলেজ ও বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে এলে সেপ্টেম্বর থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা স্কুলগুলো খুলে দিতে চাই। সরাসরি ক্লাস শুরু করা খুব দরকার।সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, আগামী নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা করা হয়েছে। পূর্ববর্তী ক্লাসে আবশ্যিক যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর পরীক্ষা না নিয়ে আগের পরীক্ষার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে।ফলে চলতি বছরের এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষা শুধু গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে সময় ও নম্বর কমিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নেওয়া হবে। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ জনিত অতিমারির কারণে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আবশ্যিক বিষয় ও চতুর্থ বিষয়ে কোনো পরীক্ষা নেওয়া হবে না।এ ছাড়া জেএসসি বা সমমান ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে আবশ্যিক বিষয় ও চতুর্থ বিষয়ের নম্বর সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে যোগ করে এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষা-২০২১ এর ফলাফল দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে কোনো রকমের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফায় এই বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১ থেকে ৭ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। পরে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘কঠোরতম বিধিনিষেধ’ জারি করা হয়। সে মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ‘কঠোরতম বিধিনিষেধের’ মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবশেষে খুলে দিতে চায় সরকার
0
Share.