শনিবার, নভেম্বর ২৩

গণটিকা কার্যক্রম ফের কখন শুরু হবে, জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

0

ঢাকা অফিস:  টিকার মজুত কিছুটা কমে যাওয়ায় আপাতত সহসাই হচ্ছে না গণটিকাদান ক্যাম্পেইন কর্মসূচি। সব কিছু নির্ভর করছে টিকার প্রাপ্যতার ওপর। টিকার পরিমাণ বাড়লে আবারো গ্রাম-শহর সবখানেই হবে ক্যাম্পেইন। আর মজুত সীমিত থাকলে টিকা কার্যক্রম চলমান থাকবে বর্তমানের মতোই হাসপাতাল-কেন্দ্রিক কেন্দ্রভিত্তিক। রোববার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর মহাখালীতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যখন বেশি পরিমাণে টিকা পাবো, তখন আবারও আমাদের ক্যাম্পেইন কার্যক্রম শুরু হবে। এখন যেভাবে চলছে, সেভাবেই চলবে।গত সপ্তাহে দেশজুড়েই পরিচালিত হয় কোভিড-১৯ টিকা ক্যাম্পেইন কার্যক্রম। যাতে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের ব্যাপক সাড়া দেখা গেছে। ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৬ দিনে প্রথম ডোজ টিকার আওতায় আসেন রেকর্ড অর্ধকোটির বেশি মানুষ। এতে সম্প্রসারিত টিকা কার্যক্রমে স্বাস্থ্য বিভাগের সক্ষমতা আবারো যাচাই হয়েছে বলে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, টিকা দেওয়ার সক্ষমতা যে আমাদের আছে, সেটা প্রমাণ হয়েছে। একটা ট্রায়ালও হয়ে গেছে। ক্যাম্পেইনের প্রথম দিন একদিনে ৩৪ লাখ টিকা আমরা দিয়েছি। এখন টিকার প্রাপ্যতা সাপেক্ষে আগামীতে আমাদের কার্যক্রম চলবে। যদি হাতে টিকা অনেক পরিমাণে চলে আসে, তাহলে শহরে ও গ্রামে দুই জায়গাতেই কার্যক্রম চলমান থাকবে। যদি কম থাকে, সেটাও আমাদের ওইভাবেই ডিজাইন করে নিতে হবে। সব নির্ভর করছে টিকার মজুতের ওপর।বর্তমানে দেশে আসা টিকার বড় অংশই চীন কোম্পানি সিনোফার্মের। তাই রাজধানীসহ সারাদেশেই এখন প্রথম ডোজ প্রয়োগ হচ্ছে কেবল মাত্র সিনোফার্মের টিকা। অন্যসব টিকার মজুত রয়েছে কেবল দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিতের। সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, তাহলে কি সরকার আবারও একক কোনো টিকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে?জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকার বিষয়ে আমাদের বিশেষ কোনো অগ্রাধিকার নেই। আমরা বিশেষ কোনো টিকার প্রতি দুর্বল, সে রকম নয়। আমরা যেখান থেকে টিকা পাচ্ছি, যারা দিতে পারছে; তাদের কাছ থেকেই আমরা নিচ্ছি। চীন টিকা দিতে পারছে, সে কারণে আমরা নিচ্ছি। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি, কবে তারা দেবে। কোভ্যাক্সের কাছ থেকে ৭ কোটি টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া ভারতের কাছ থেকে ২ কোটি ৩০ লাখ টিকা এখনো পাওনা আছে। আমরা তাগাদা দিচ্ছি তাদের। তারা এখনো কিছু আমাদের জানায়নি। তারা আশ্বাস দিয়েছিল আগস্ট থেকে টিকা দেওয়া শুরু করবে, কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা কোনো শিডিউল পাইনি।এছাড়া যৌথ টিকা উৎপাদনের বিষয়ে আগামী সপ্তাহেই চীনের সঙ্গে চুক্তি হতে যাচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে যৌথ উৎপাদনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই হবে আগামী সপ্তাহে। ত্রিপক্ষীয় বিষয় এটা। যারা উৎপাদন করবে, তাদের কিছু বিষয় থাকে, আমাদের সরকারের কিছু বিষয় থাকে। চীন সরকারের কিছু বিষয় থাকে। সব মিলিয়েই কাজটা করতে হবে।এছাড়া কোভিড সংক্রমণ কিছুটা কমলেও এখনই স্বস্তির সময় আসেনি বলে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটা সময় আমাদের শনাক্ত হার ৫ শতাংশের নিচে ছিল, আমরা সেই পর্যায়ে যেতে চাই। এখনো  স্বস্তির কোনো জায়গা নেই। এখনো আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। অনেক দূর যেতে হবে।সবার সতর্কতার ওপর জোর দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যেহেতু সব খুলে দেওয়া হয়েছে, সেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমাদের মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে।এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসে শনিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে রোববার (১৫ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন করে মারা গেছেন আরও ১৮৭ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ১৭৫ জনে।এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৬ হাজার ৬৮৪ জনের দেহে। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ লাখ ১৮ হাজার ৯০২ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার একজনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২৫ শতাংশ। রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৩৭১ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ লাখ ৯২ হাজার ৬৯৮ জন। 

Share.