ঢাকা অফিস: দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় হারানো যৌবন ফিরে পাওয়া কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত অপেক্ষার প্রহর গুনছে। প্রকৃতির সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি চলতি বর্ষা মৌসুমে সেজেছে আপন মহিমায়। আগত ভ্রমণ পিপাসু দর্শনার্থীদের মন ভরে দিবে দর্শনীয় স্থানগুলো নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের বরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে আগত পর্যটকদের সেবা প্রদান করবেন পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে তাদের সকল প্রকার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে চলমান লকডাউনে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় সংকটে পড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হবে এমন খবরে কুয়াকাটায় পর্যটন ব্যবসায়ীদের মাঝে সু-বাতাস ফিরে এসেছে। কুয়াকাটায় শতাধিক হোটেল-মোটেলগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী সাজগোজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অন্য সকল পর্যটন ব্যবসায়ীরা একই কাজ করছেন। প্রায় ৫ মাস পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা বন্ধ থাকায় কয়েক’শ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে এমন দাবি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধি-শাখার উপ-সচিব মো. রেজাউল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সূত্রে জানা গেছে, ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র আসন সংখ্যা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে। সকল ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক জারিকৃত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন করবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা করলে কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে ও তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
হোটেল-মোটেল মালিকরা জানায়, লকডাউনের কারণে অফিসের কোনো কাজ-কর্ম নেই। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সব কিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘ সময় বসে বসে খেয়ে অনেকেরই ঋণের বোঝা ভারি হয়েছে। তাই হোটেল-মোটেল ছেড়ে কেউ চাষাবাদ করছে। কেউ কেউ নিজ বাড়িতে গবাদি পশুসহ হাঁস-মুরগির খামার শুরু করছেন। কেউ আবার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। তবে ১৯ আগস্ট দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণায় কুয়াকাটায় ট্যুরিজম ব্যবসায়ীদের মাঝে এখন খুশির বন্যা বইছে।কুয়াকাটা ইলিশ পার্ক এন্ড ইকো রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, সরকার শর্ত দিয়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলো যেভাবে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সেভাবেই আমরা পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছি। এতদিন অনেক কর্মচারীকে ছুটি দেয়া হয়েছিল, তাদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এ্যাসোসিয়েশন কুটুম‘র সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্পের। এর সঙ্গে দেশের ৪০ লাখ লোকের জীবন-জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পুলিশ পরিদর্শক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. বদরুল কবির বলেন, পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানতে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করবে।