মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হেফাজত আমিরের আহ্বান

0

ঢাকা অফিস: কওমি মাদ্রাসাসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরীস নদভী সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের সার্বিক আর্থসামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সরকার ১১ আগস্ট থেকে অফিস, হাট-বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালুর অনুমতি এবং সীমিত পরিসরে গণপরিবহন খুলে দিয়েছে। এ ছাড়া আগামী ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন, বিনোদনকেন্দ্র, চিড়িয়াখানা ও গণপরিবহন চলাচলে সকল বিধিনিষেধ তুলে নিচ্ছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমরা বাস্তবসম্মত ও জনচাহিদার প্রতিফলন হিসেবে দেখছি।‘এ পরিস্থিতিতে দেশের ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকদের সঙ্গে সরকারের প্রতি আমরাও জোর আহ্বান জানাই যে, ছুটি আর দীর্ঘায়িত না করে অবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।’উলামায়ে কেরামের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সরকার গত বছরের আগস্ট মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কওমি মাদ্রাসাসমূহের শিক্ষা কার্যক্রম চালুর অনুমতিদানের উল্লেখ করে হেফাজত আমীর বলেন, এই ৮ মাস সময়ে কোন মাদরাসায় করোনা ছড়িয়ে পড়ার নজির ছিল না। কওমি মাদ্রাসাসমূহের এই ইতিবাচক অভিজ্ঞতার আলোকে শুধু মাদরাসা নয়, বরং কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ রাখা বাস্তবসম্মত নয়।তিনি বলেন, শিক্ষার ধারাবাহিকতা থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকার কারণে দেশের প্রতিটা শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকরা আজ দিশেহারা। বই-পুস্তকের সঙ্গে কোমলমতি ছোট শিক্ষার্থীদের যেমন ব্যাপক ফারাক তৈরি হয়েছে, তেমনি কিশোর বয়সের শিক্ষার্থীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যে সময়টা তারা বই পুস্তক ও নৈতিকতার অনুশীলনে ব্যয় করত, সেটা তারা পার করছে মোবাইল-ইন্টারনেটের ক্ষতিকর ব্যবহার অথবা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে অহেতুক আড্ডা দিয়ে। পাশাপাশি নানা ধরনের কিশোর অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। অভিভাবকরা সন্তানদের বিপথগামিতা ও ভবিষ্যৎ ভেবে গভীর উৎকণ্ঠায় ভুগছেন।আল্লামা বাবুনগরী বলেন, বর্তমানে শিশু-কিশোর ও তরুণদের খেলাধুলায়, বেড়াতে, হাটবাজারে ও শপিং মলে যেতে এবং গণপরিবহনে চড়তে কোনরূপ সরকারি বিধিনিষেধ নেই। অফিসে, ব্যবসায় ও কলকারখানায় কাজ করা তাদের অভিভাবকদের সংস্পর্শেও তারা প্রতিদিনই আসছে। তাছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকেও বলা হচ্ছে, করোনায় কম বয়সীদের তেমন ক্ষতি করছে না। এমন পরিস্থিতিতে সবকিছু উন্মুক্ত রেখে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কোনই যৌক্তিকতা থাকে না।তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশের আলেমসমাজও সরকারের প্রতি মাদ্রাসাসমূহ খুলে দিতে বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। যাতে করে লাখ লাখ মাদ্রাসা ছাত্রের শিক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ থাকার পাশাপাশি কুরআন-হাদিস ও ইসলামী জ্ঞান চর্চার বরকতে করোনাসহ সকল বিপদ থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পায়।

Share.