রবিবার, নভেম্বর ২৪

১২ দিনের ব্যবধানে সৈকতে ফের মৃত ডলফিন

0

ঢাকা অফিস: পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ১২ দিনের ব্যবধানে আবারও ভেসে এসছে ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি মৃত ডলফিন। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে কুয়াকাটা সৈকতের ফরেস্ট ক্যাম্প পয়েন্টে ডলফিনটি ভেসে আসতে দেখেন স্থানীয়রা।পরে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহার নির্দেশনায় ডলফিনটি সমুদ্র তিরে মাটি চাপা দেয় ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যরা। ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যরা জানায়, প্রায় ১২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থের ডলফিনটির মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জেলেদের জালের আঘাতে এটির মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের ধারণা। এর আগে ভেসে আসা মৃত ডলফিনের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় বলে জানিয়েছে ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যরা। কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, এটি ইরাবতি ডলফিন। পরবর্তীতে আর কোনো মৃত ডলফিন ভেসে আসলে সেটির খাদ্যনালী সংগ্রহ করে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো। এর আগে গত ২১ আগস্ট সৈকতের ব্লক পয়েন্ট এলাকায় ৭ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি মৃত ইরাবতি ডলফিন ভেসে আসে। এ নিয়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬টি মৃত ডলফিন ভেসে এল। এছাড়া কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ২০২০ সালে ৬টি মৃত ডলফিন, ১টি মৃত তিমি ভেসে এসেছিল। বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা সময় নিউজকে জানান, বন বিভাগের সহযোগিতায় বন্যপ্রাণীবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের নদী ও সমুদ্রসীমায় সাত প্রজাতির ডলফিনের আবাস রয়েছে। সমুদ্রের যে এলাকায় ডলফিন বিচরণ করে, সেখানে মাছের আনাগোনাও বেশি থাকে। এ কারণে জেলেরা অনেক সময় ডলফিনের গতিবিধির ওপর নজর রাখে ও সেসব এলাকায় জাল ফেলে। এতে অনেক সময় জালের ফাঁসে জড়িয়ে বা নৌযানের সোনারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডলফিনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ইদানীং কোনো কোনো দেশে প্লাস্টিক বর্জ্য খেয়ে তিমি বা ডলফিনের মৃত্যুর নজিরও দেখা গেছে। ডলফিন রক্ষায় জেলে স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই বন কর্মকর্তা বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী ডলফিন হত্যা করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া মৃত ডলফিনের দেহাবশেষ অবৈধভাবে কারও কাছে পাওয়া গেলেও সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডই হতে পারে।

Share.