শনিবার, নভেম্বর ২৩

‘সাধারণ মানুষের জন্য বুস্টার ডোজের প্রয়োজন নেই’

0

ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা মোকাবেলায় সাধারণ মানুষের জন্য টিকার বুস্টার ডোজ বা তৃতীয় ডোজের প্রয়োজন নেই বলে বিজ্ঞানীরা একটি আন্তর্জাতিক মেডিকেল জার্নালে জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দ্য লানসেটে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ডেল্টা ধরনের ভয়াবহতা তুলে ধরে বলা হয়েছে, এই মহামারিকালে বুস্টার ডোজ সাধারণ মানুষের জন্য উপযুক্ত নয়।ল্যানসেটের ওই নিবন্ধটি লিখেছেন ডব্লিউএইচও শীর্ষ বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন, আনা-মারিয়া হেনাও-রেস্ত্রেপো ও মাইক রায়ান।বিশেষজ্ঞদের এ প্যানেলে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষ বিজ্ঞানীরাও রয়েছেন। তারা বলছেন, সম্প্রতি একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদিত ভ্যাকসিনগুলো অত্যন্ত কার্যকর এবং দীর্ঘদিন অ্যান্টিবডি উৎপাদনে সক্ষম। এসব ভ্যাকসিন গ্রহণ করলে মারাত্মক উপসর্গ, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুহার একেবারেই কমে যায়।সাম্প্রতিক বহু গবেষণার ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, করোনার মৃদু উপসর্গ ঠেকাতে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে। তবে গুরুতর উপসর্গ থেকে সুরক্ষা দিতে করোনার ভ্যাকসিন বহুদিন অব্যাহতভাবে কার্যকর থাকতে পারে। মানুষের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বেশ জটিল। ফলে ভ্যাকসিন গ্রহণের বহুদিন পরেও অ্যান্টিবডি কাউকে গুরুতর অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।বিজ্ঞানীদের পর্যালোচনা বলছে, ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও গবেষণাই সব মানুষের জন্য একটি বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছে না। কেননা, ভ্যাকসিন গ্রহণ করলে গুরুতর উপসর্গের বিরুদ্ধে কার্যকারিতা দীর্ঘদিন টিকে থাকে। যদিও বুস্টার ডোজ নিয়ে ভিন্ন আশঙ্কাও করছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, যদি অপ্রয়োজনীয় ডোজ শরীরে উল্লেখযোগ্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, তাহলে বুস্টার ডোজ গ্রহণের প্রভাবে লাভের চেয়ে বরং ক্ষতিই বেশি হবে।তারা বলছেন, বুস্টার নেওয়ার প্রকৃত কারণ শনাক্ত করতে হবে। কারণ করোনা ও এর ধরনের তীব্র লক্ষণ না থাকলে টিকা তেমন কার্যকর হয় না।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান লেখক আনা-মারিয়া হেনাও-রেস্ত্রেপো বলেন, টিকাকরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে গুরুতর রোগ থেকে যে রক্ষা মিলবে, বর্তমান গবেষণাগুলোতে তার কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই। সারা বিশ্বে যারা এখন পর্যন্ত একটি ডোজও পাননি তাদেরকেই আগে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। যদি সর্বত্রই টিকাকরণ কর্মসূচি ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলে মহামারির তাণ্ডব ও নতুন ধরন সৃষ্টিতে করোনা কাবু হয়ে যাবে।তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ভিন্ন নীতিতে হাঁটছে। তারা টিকার আওতায় আসা অনেক নাগরিকদের বাড়তি ডোজ দেওয়ার ব্যাপারে এগিয়ে রয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রকরাও বুস্টার ডোজ প্রয়োগে সায় দিচ্ছেন। দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের একটি প্যানেল আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর ফাইজার ও বায়োএনটেকে তৃতীয় ডোজ প্রয়োগে আলোচনায় বসবে।

Share.