ডেস্ক রিপোর্ট: জাতিসংঘের শীর্ষ স্থানীয় মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তা অ্যানড্রু কির্কউড বলেছেন, ১লা ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর ২০ বছরের মধ্যে মিয়ানমারে দারিদ্র্য সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে গিয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, দেশটির জনগণ বেঁচে আছেন এক ভয়াবহ সঙ্কটের মধ্যে। ভার্চ্যুয়াল এক ব্রিফিং য়ে তিনি বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তিনগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন সহায়তা পাওয়ার যোগ্য মানুষের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০ লাখ। অন্যদিকে দেশটিতে ২ কোটি মানুষ দারিদ্র্যে বসবাস করছেন। এই সংখ্যা পুরো দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। বার্তা সংস্থা এপিকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে মিয়ানমারের অনলাইন দ্য ইরাবতী। ইয়াঙ্গুন থেকে ওই ব্রিফিংয়ে কথা বলছিলেন অ্যানড্রু কির্কউড। তিনি বলেন, দেশটিতে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক বিভক্তি বৃদ্ধির কারণে সেখানে সঙ্কট বাড়ছেই। এই পরিস্থিতির জন্য আরো যেসব ঘটনা দায়ী তা হলো- গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে সেনাবাহিনী। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস মহামারি, যা এই গ্রীষ্মে মিয়ানমারে এক মারাত্মক সংক্রমণ ঢেউ সৃষ্টি করে। অ্যানড্রু কির্কউড বলেন, কার্যত, মিয়ানমারে আমরা দেখেছি একটি সঙ্কটের পরেই আরেকটি সঙ্কট শুরু হচ্ছে। একটি সঙ্কটের চেয়ে আরেকটি সঙ্কট বড় হয়ে সামনে আসছে। তিনি আরও বলেন, ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে জাতিসংঘ খাদ্য ও অর্থ সহায়তামূলক কর্মসূচি পৌঁছে দিয়েছে কমপক্ষে ১৪ লাখ মানুষের কাছে। পুরো মিয়ানমারের গ্রামীণ জনপদে এই সহায়তা দেয়া হয়েছে। আবার কিছু শহর এবং উপশহরেও তা দেয়া হয়েছে। অ্যানড্রু কির্কউড বলেন, আমরা জীবন রক্ষা করছি। আমরা ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করছি। ৩০ লাখ মানুষের সহায়তা প্রয়োজন। তাদের জরুরি মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা তাদের সবাইকে সহায়তা দিতে সক্ষম হচ্ছি না। মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত এই সমন্বয়ক উল্লেখ্যযোগ্য অপারেশনাল চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে সড়কপথে অবরোধ। দেশের ভিতরে সফরের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা। করোনা মহামারিতে বিধিনিষেধ। তা ছাড়া আছে সার্বিক অনিরাপত্তা। তার ভাষায়, আমরা অসহায় মানুষদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে কর্মীদের এবং ওই সহায়তা নিয়ে যেতে নিরাপদ সুবিধা দেয়ার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। আমরা এ বছর এই ৩০ লাখ মানুষের সহায়তার জন্য ৩৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার অর্থ দেয়ার অনুরোধ করেছি। এখন পর্যন্ত আমরা এর মাত্র এক তৃতীয়াংশ পেয়েছি। এর অর্থ হলো আমাদের এখনও ২৫ কোটি ডলার অর্ধের ফারাক রয়েছে। এর অর্থ হলো, যেসব মানুষের সহায়তা প্রয়োজন তাদের সবার কাছে আমরা পৌঁছতে সক্ষম হবো না। তিনি বলেন, মিয়ানমারে মানুষের মাঝে আবেগ খুব বেশি । অনেক মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছেন। অনেক মানুষ মানবিক সহায়তা পাবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন।
মিয়ানমার দারিদ্র্য সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে আছে: অ্যানড্রু কির্কউড
0
Share.