করোনা পরিস্থিতি ফের ভয়াবহ হচ্ছে ইউরোপজুড়ে

0

ডেস্ক রিপোর্ট: মহামারি করোনার তাণ্ডব ফের বেড়েছে সারা বিশ্বে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন ভাইরাসটিতে। টিকা কার্যক্রম শুরুর পর মাঝে সারা বিশ্বে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে এলেও ফের সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে শুরু করে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপজুড়ে করোনার প্রকোপ বেশি বেড়েছে। কিছুদিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, ইউরোপে করোনার বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে এই শীতে মহাদেশটিতে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যাবে। তাই ইউরোপজুড়ে কঠোর বিধিনিষেধ পুনরায় আরোপ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কোভিডের অতিসংক্রামক ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছিল। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্ট করোনার আরেক ভ্যারিয়্যান্ট ডেলটার চেয়ে কম ক্ষতিকর। ওমিক্রনে সংক্রমিত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা ডেলটার তুলনায় ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ কম। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এরই মধ্যে সতর্ক করে বলেছে—ইউরোপজুড়ে কোভিডের সংক্রমণ বৃদ্ধি দেশগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ হাজার ৫৬৪ জন। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখ ১৭ হাজার ৮৩১ জন। ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে গতকাল মঙ্গলবার নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার ৮০৭ জন। কোভিডের মহামারি শুরুর পর থেকে এক দিনে দেশটিতে এত সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। কেবল ফ্রান্সেই দৈনিক সংক্রমণের রেকর্ড হয়নি। দৈনিক সংক্রমণের রেকর্ড ভেঙেছে ইতালি, গ্রিস, পর্তুগাল ও ইংল্যান্ডেও। তবে বিবিসি বলছে, এ পরিসংখ্যান বড়দিনের ছুটির সময় বিলম্বে প্রতিবেদন দেওয়ার কারণে হয়ে থাকতে পারে। ইতালিতে দৈনিক সংক্রমণ সংখ্যা ৭৮ হাজারে পৌঁছেছে, যা মহামারি শুরুর পর থেকে নতুন রেকর্ড। এ ছাড়া দেশটিতে কোভিডে আরও ২০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতালিতে কোভিডে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৬ হাজার ৭৫৩ জনে। যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৭১ জন এবং মারা গেছেন ১৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৮ হাজার ২১ জন মারা গেছেন। জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৯৭৮ জন এবং মারা গেছেন ৪৪৮ জন। ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৪৮ জন এবং মারা গেছেন ১৩৪ জন। পর্তুগালেও রেকর্ডসংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা টিকাদানের হারে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর কাতারে থাকলেও ওমিক্রনের তাণ্ডবে দেশটিতে ফের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। এছাড়া টিকাদানের হার অনেক ভালো হওয়া সত্ত্বেও সাইপ্রাস, ইতালি ও গ্রিসেও সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। করোনা সংক্রমণের এমন পরিস্থিতিতে প্যারিস, লন্ডন, বার্লিনসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি শহর সরকারিভাবে নববর্ষ উদ্‌যাপন বাতিল করেছে।

 

Share.