অর্ধযুগ হয়ে গেল দিতি নেই

0

বিনোদন ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী পারভীন সুলতানা দিতি। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি যেমন নায়িকা হিসেবে সফল ছিলেন, তেমনি সিনিয়র চরিত্রেও তার অভিনয় এখনো দর্শক হৃদয়ে দাগ কেটে আছে। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দিতি। মায়াবী চেহারার অধিকারিণী সেই অভিনেত্রীর আজ ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৬৫ সালের ৩১ মার্চ দিতি নারায়ণগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে গায়িকা হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। সে জন্য নিয়মিত গানের চর্চাও করতেন। গান গেয়ে জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কারও লাভ করেছিলেন দিতি। এর সুবাদে তিনি বিটিভিতে গান করার সুযোগ পান। সেখান থেকে অভিনেতা আল মনসুরের নজরে আসেন। তিনিই দিতিকে নাটকে অভিনয়ের কথা বলেন এবং ‘লাইলি মজনু’ নাটকে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। এই নাটকে দিতির অভিনয় দারুণ প্রশংসিত হয়েছিল। তবে তার পরিবার অভিনয়ে বাধা দেয়। কিন্তু মনের ভেতর থেকে অভিনয়ের প্রতি একটা ভালো লাগা তৈরি হয় দিতির। কিছু দিন পরেই তিনি ‘ইমিটেশন’ নামক নাটকে অভিনয় করেন। তারপর ১৯৮৪ সালে নতুন মুখের সন্ধানে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সিনেমায় আসেন দিতি। প্রয়াত এই অভিনেত্রীর প্রথম সিনেমা উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। কিন্তু ছবিটি শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। দিতি অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি ছিল ‘আমিই ওস্তাদ’। দীর্ঘ ৩১ বছরের ক্যারিয়ারে দুই শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন দিতি। তার মধ্যে ‘স্বামী স্ত্রী’, ‘আপন ঘর’, লেডি ইন্সপেক্টর’, ‘খুনের বদলা’, ‘দূর্জয়’, ‘শেষ উপহার’ ‘কালিয়া’, ‘চার সতীনের ঘর’, ‘মাটির ঠিকানা’, ‘হৃদয় ভাঙা ঢেউ’, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’, ‘জোনাকির আলো’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। দিতি ১৯৮৭ সালে বিখ্যাত পরিচালক সুভাষ দত্তের ‘স্বামী স্ত্রী’ ছবিতে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে এই নায়িকা প্রথমে বিয়ে করেছিলেন অভিনেতা সোহেল চৌধুরীকে। সেই সংসার ভেঙে যাওয়ার পর চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করেন। এই সংসারও টেকেনি। শেষ বয়সে দিতি একাই ছিলেন। তবে তার প্রথম সংসারের একটি মেয়ে রয়েছে। নাম লামিয়া চৌধুরী। ২০১৫ সালে দিতির মস্তিষ্কে ক্যানসার ধরা পড়ে। সে বছর তাকে ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। কিন্তু দেশে ফেরার পর আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ফলে চেন্নাইয়ের সেই হাসপাতালে ফের তাকে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু অবস্থার আর উন্নতি হয়নি। ফলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ২০১৬ সালের ২০ মার্চ তিনি মারা যান।

Share.