হাওড়ে বাড়ছে ঢলের পানি, ডুবছে ফসল

0

বাংলাদেশ থেকে  নেত্রকোনা প্রতিনিধি: জেলার খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলার হাওড়াঞ্চলে পাহাড়ী ঢলের পানি ঢুকতে শুরু করেছে। গত তিনদিনে দুই উপজেলার বেশ কয়েকটি হাওড়ের নিম্নাঞ্চলের অন্তত ১ হাজার একর জমির বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। ধান পাকার আগেই পাহাড়ী ঢলের পানি আসতে শুরু করায় আহাজারি শুরু হয়ে গেছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে। ২০১৭ সালের মতো আবারও ফসলহানির আশঙ্কা করছেন তারা। খালিয়াজুরীর পুরানহাটি, লক্ষ্মীপুর, পাঁচহাট, জগন্নাথপুর ও মদন উপজেলার দেওসহিলা এবং ফতেপুর গ্রামের কৃষকরা জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খালিয়াজুরীর ওপর দিয়ে প্রবহমান ধনু, সুরমাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। শনিবারের মধ্যে নদীগুলোর পাড় উপচে যায়। আজ রবিবার দুপুর নাগাদ খালিয়াজুরীর কীর্তনখোলা, লক্ষ্মীপুর, চুনাই হাওড়, বাইদ্যারচর, কাটকাইলের কান্দা, টাকটার, মনিজান, লেবরিয়া, হেমনগর, চাকুয়া ইউনিয়নের গঙ্গাবদর, নয়াখাল, বাগানী, বৈলং, ডাকাতখালী ও মদনের তলার হাওড়ের নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১ হাজার একর বোরো জমি তলিয়ে যায়। এসব এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে নির্মিত বেশকিছু ফসল রক্ষা বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানান তারা। খালিয়াজুরীর পুরানহাটি গ্রামের কৃষক মনির হোসেন বলেন, ‘আমার অন্তত ২০ একর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এসব জমিতে কেবলমাত্র চাল গজাচ্ছিল। লক্ষীপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন, আব্দুর রউফ, ফুল মিয়া ও পাঁচহাট গ্রামের মিজাজুল মিয়া জানান, তাদেরও অন্তত ১৫ একর জমির ফসল তলিয়েছে। মদনের দেওসহিলা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ চৌধুরী বলেন, ‘তলার হাওড়ের নিম্নাঞ্চলে আমার নিজের জমিসহ অনেকের জমি তলিয়ে গেছে। কেউ কেউ কাঁচা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন।’ আজ রবিবার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত, খালিয়াজুরীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএইচএম আরিফুল ইসলাম, কৃষি কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন হাওড়ের বিভিন্ন বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলো পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেন এবং বাঁধ রক্ষায় কৃষকদেরও প্রস্তুত থাকতে বলেন। এর আগে শনিবার জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমানও খালিয়াজুরী এবং মদনের হাওড় এলাকা পরিদর্শন করেন। জানা গেছে, ২০১৭ সালে একই সময়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে সৃষ্ট আগাম বন্যায় খালয়াজুরী, মোহনগঞ্জ, মদন ও কলমাকান্দা উপজেলার হাওড়ের শতভাগ ফসল তলিয়ে গিয়েছিল। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন হাজার হাজার কৃষক। এখনও কৃষকদের অনেকে সে ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেননি। চার বছর পর আবার একই আশঙ্কা তাদের গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

Share.