নাম পাল্টে ২১ বছর আত্মগোপনে ছিলেন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হুজিবি’র মুফতি শফিক

0

ঢাকা অফিস: নাম পরিবর্তন করে ২১ বছর আত্মগোপনে বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে বোমা হামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি মুফতি শফিকুর রহমান ওরফে শফিক (৬১)। বৃহস্পতিবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত শফিকুর রহমান নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজিবি) প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। তিনি সংগঠনটির আমিরের দায়িত্বও পালন করেছেন। শুক্রবার দুপুরে কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। র‌্যাবের মুখপাত্র মঈন জানান, ২১ বছর আগে রমনার বটমূলে হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন শফিকুর রহমান। এ ছাড়া ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যার সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে। ২০০১ সালে রমনার বটমূলে হামলার পর ২০০৮ সাল পযন্ত তিনি আত্মগোপনে থেকে হুজিবি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন। আব্দুল করিম নাম ধারণ করে ২০০৮ থেকে নরসিংদীর একটি মাদ্রাসায় আত্মগোপন করেন তিনি। নরসিংদীর চর এলাকায় অবস্থিত একটি মসজিদে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা বেতনে ইমামতির চাকুরি নেন শফিক। ইমামতির আড়ালে তিনি মানুষের মাঝে ধর্মের নামে বিভ্রান্তিমূলক অপব্যাখ্যা প্রচার করতেন। কৌশলে মাঝে মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতেন তিনি। তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর সব মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতার গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করছে র‌্যাব। এরই মধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম পলাতক আসামি জঙ্গি ইকবালকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব-২ কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকা থেকে মুফতি শফিকুর রহমানকে গ্রেফতার করে। একমাত্র ছেলের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখতেন তিনি। তবে দেখা করতেন নরসিংদীর বাইরে। নিরাপত্তার জন্য তিনি নিজের নাম-পরিচয় বদলান। ছেলের সঙ্গে সাক্ষাত ছাড়া তিনি নরসিংদীর বাইরে যেতেন না। ছেলেকেই অনুসরণ করে র‌্যাব। দীর্ঘ সময় নজরদারি রাখে র‌্যাবের দল। তিনি নরসিংদীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাদ্রাসার মসজিদে ঈমামতি করতেন আব্দুল করিম নামে। সোমবার সন্ধ্যায় র‌্যাব খবর পায় তিনি নরসিংদীর বাইরে আছেন। ছেলের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য গেছেন এমন তথ্য পেয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। র‌্যাব চেষ্টা করেছে মাদ্রাসা নয়, রাস্তায় বা প্রত্যন্ত এলাকার বাইরে গ্রেফতার করতে। কারণ চরে বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে আসামি বা জঙ্গি অভিযানে ইতোপূর্বে হামলার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সুযোগটি গতকাল রাতেই এসে যায়। ছেলের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সড়ক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Share.